গ্রামবাসীদের সচেতনতায় প্রাণ বাঁচল রাজ্য প্রাণী শাবকের

Howrah News: হাওড়ায় উদ্ধার ছোট্ট বাঘরোল, পাঁচিলের ওপর হাঁটতে গিয়ে পড়ে যায় শাবকটি

হাওড়া: উদ্ধার রাজ্য প্রাণী বাঘরোলের ছানা! প্রতিনিয়ত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নানা কারণে বিপাকে পড়ছে বন্যপ্রাণী। বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান ছোট হয়ে আসছে। বন জঙ্গল সাফ করে জনবসতি এবং কলকারখানা গড়ে উঠছে। এর ফলেই লোকালয়ে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ে বিপদে পড়ছে। এমন প্রবণতা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। আবার প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে গন্ধগোকুল, বনবিড়াল, গোসাপ, বাঘরোলের মত বিভিন্ন প্রাণী।

আরও পড়ুন: প্যারিস অলিম্পিক্সে ইতিহাস গড়ল ভারত, শুটিংয়ে পদক জিতলেন মনু ভাকের‍

আবার লোকালয়ে দেখা মিলল মা-সহ বাঘরোলের ছানার। ঘটনাটি ঘটে, বাগনান বাঙালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওলানপাড়া গ্রামে। জানা যায়, সন্ধায় একটি বাঘরোল ছানা তার মায়ের সঙ্গে যাবার সময় পাঁচিল থেকে পড়ে গিয়ে মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যায়। শাবকটির পিছন পায়ে চোটও লাগে। কিছু কুকুর তাড়া করায় ছানাটি লোকালয়ে চলে আসে। স্থানীয় যুবক শেখ শফিকুল ছানাটি তুলে এনে খবর দেন এলাকার সমাজসেবী বাপন কোলেকে। বাপন কোলে বাঘরোল টি উদ্ধারের জন্য যোগাযোগ করেন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য সুমন্ত দাস ও ইমন ধাড়ার সঙ্গে।

সুমন্ত দাস, ইমন ধাড়া এবং বাপন কোলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন বাঘরোল ছানাটি ভীষণ ছোট এবং পায়ের আঘাতও সেরকম গুরুতর নয়। পঞ্চায়েত সদস্য বিক্রম দে ঘটনাস্থলে আসেন। সুমন্ত এবং ইমন গ্রামের কিছু মানুষকে নিয়ে সেই স্থানে যান এবং মা বাঘরোলের খোঁজ শুরু করেন। যেখানে বাঘরোল ছানাটি পাওয়া গিয়েছিল সেই স্থান এবং তার পার্শ্ববর্তী স্থানে বহু চেষ্টা করেও মায়ের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়নি ছানা বাঘরোলটিকে। এরপর সেই স্থানে একটি খাঁচায় বাঘরোল শাবক টি রাখা হয়, অপেক্ষা করে যাতে মা এসে ছানাটিকে নিয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও মা বাঘরোল আসেনি।

আরও পড়ুন: ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে অপমান!’ কলকাতায় ফিরেও অনড় মমতা

এদিকে ফাঁকা জায়গায় ছানা টিকে ছেড়ে দিলে অন্য শিকারি প্রানী মেরে দিতে পারে। তাই বাঘরোল শাবক টি উদ্ধার করে তাঁরা নিয়ে আসেন। ছানাটি দীর্ঘক্ষণ কিছু খাবার খায়নি। তাই তাকে দুধ খাওয়ানো হয়। সুমন্ত এবং ইমন এলাকার মানুষ কে রাজ্য প্রানী বাঘরোলের গুরুত্ব সম্বন্ধে সচেতন করেন। পরে বন বিভাগ উদ্ধার করে বাঘরোল শাবকটিকে গড়চুমুক মিনি জু-তে নিয়ে যায়।

এই প্রসঙ্গে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিক বলেন, এই বাঙালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওলানপাড়া গ্রামের কাছেই কালিকাপুর গ্রামে গত তিন বছর আগে তিনটি বাঘরোল কে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষকে আমরা রাজ্য প্রাণী বাঘরোল সংরক্ষণের গুরুত্ব বোঝাতে পেরেছি। তাই ওলানপাড়া গ্রামের মানুষ এই শাবকটিকে রক্ষা করতে পেরেছে। এই বছরই জানুয়ারি মাসে আমরা মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া দুটি শাবক বাঘরোল কে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় পুনরায় মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এক্ষেত্রে চেষ্টা করা সত্ত্বেও মা বাঘরোল সারা রাত আসেনি, হয়তো মা বাঘরোল অন্যত্র সরে গেছে। তাই উদ্ধারের প্রয়োজন হল।