ছোট গ্রন্থাগার

Book Village: মহারাষ্ট্র ও কেরলের পর পশ্চিমবঙ্গ, বাংলার প্রথম বইগ্রাম আলিপুরদুয়ারে

আলিপুরদুয়ার: মহারাষ্ট্রের ভিলার ও কেরলের পেরুকালেমের পর পশ্চিমবঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলার পানিঝোরায় তৈরি হল বইগ্রাম। বাংলায় এটাই প্রথম কোন‌ও বইগ্রাম। আপনকথা নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এটি সম্ভবপর হল।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর অবস্থিত একটি ছোট গ্রাম পানিঝোরা। এই গ্রামে বসবাস করে সাতটি আদিবাসী সম্প্রদায় ও অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের। এই এলাকার ছোট থেকে বড় সকল বয়সের ছেলে মেয়েদের বইয়ের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে বইগ্রামের চিন্তা ভাবনা আপনকথা সংস্থার। শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি আগামী দিনে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে এই গ্রামটি। আপনি এই গ্রামে ঢুকলেই বাড়ি বাড়ি পেয়ে যাবেন গ্রন্থাগার।

আর‌ও পড়ুন: ৮ মাসে ১৪৪ জন আক্রান্ত! এই জেলায় ডেঙ্গির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ম্যালেরিয়া

আলিপুরদুয়ার শহর ছাড়িয়ে রাজাভাতখাওয়ার পথে ১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে পানিঝোরা গ্রামটি। আপনকথা নামে একটি সংগঠন এবং আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন এই গ্রামটিকেই বেছে নিয়েছে বইগ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। গ্রামে ঢোকার মুখেই চোখে পড়বে একটি তোরণ। বইকে থিম করে কাঠ দিয়ে গাছের আদলে তৈরি সেই তোরণ। সেখানে থাকছে বইয়ের রেপ্লিকা ও ছোট লাইব্রেরির রেপ্লিকা। কাঠের তৈরি তোরণ পেরিয়ে গ্রামে প্রবেশ করেই চোখে পড়বে বইগ্রামের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বানানো একটা ফলক। গ্রামের ভেতরে ১০টি বাড়ির সামনে তৈরি হচ্ছে ‘আলোকবর্তিকা’। এটি হল কাঠের তৈরি ছোট গ্রন্থাগার। সেগুলির প্রত্যেকটিতে গল্পের বই, বিজ্ঞানের বই, সামাজিক সচেতনতামূলক বই-সহ নানা স্বাদের বই থাকবে। ৫০ টি বই থাকবে এই ছোট গ্রন্থগারে।

আপনকথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার পার্থ সাহা জানান, প্রত্যন্ত এই গ্রামে ছেলেমেয়েরা অনেক সংঘর্ষ করে পড়াশুনো চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি টালমাটাল হওয়ার কারণে কোভিডের পর পড়াশুনো ছেড়েছে। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় এখানকার মানুষের কথা সচরাচর সামনে উঠে আসে না। কিন্তু এই ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রতি টানের কথা জানতে পেরেই আমাদের এই উদ্যোগ। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ছোট গ্রন্থাগার তৈরির সংকল্প রয়েছে আমাদের।

প্রত্যন্ত পানিঝোরা গ্রামের জনসংখ্যা ৩২০ জন৷ ৭৩ টি বাড়ি রয়েছে৷ ছাত্রছাত্রী রয়েছে ১০০ জন। এই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা বই কিনতে পারে না। বইগ্রাম-এর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার তৈরি হচ্ছে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানে চাকরিপ্রার্থীদের বইও থাকবে৷ ইচ্ছে করলেই গ্রামের মানুষজন সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে। পাশাপাশি পর্যটকরা এসেও এই বইগ্রামের গ্রন্থাগারে ইচ্ছেমত বই পড়তে পারবেন।

অনন্যা দে