চিন্তায় বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা

Bangladesh Students in Visva Bharati: অশান্ত দেশ, ওপার বাংলার চিন্তায় ঘুম কেড়েছে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের! কেন জানেন?

বীরভূম: ২২ শ্রাবণ অনুষ্ঠানের মাঝেও কপালে চিন্তার ভাঁজ ওপার বাংলা থেকে আগত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশি পড়ুয়াদের। উত্তাল বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। পড়শি দেশ দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন আন্দোলনকারীদের দখলে ওপার বাংলার পরিস্থিতির আঁচ পড়েছে এপার বাংলাতেও। পড়শি দেশের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ২২ শ্রাবণ কবি প্রয়াণ অনুষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ভবন’ থেকে স্থানান্তরিত করা হয়। বৃক্ষরোপণ-সহ সমগ্র অনুষ্ঠান হয় উপাসনা গৃহের বিপরীতে পুরনো মেলার মাঠে৷ পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনের নিরাপত্তার জন্য বিশ্বভারতীর তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে ৷

আরও পড়ুন: ভিনেশ বাতিল, IOA সভাপতি পিটি ঊষাকে ফোন প্রধানমন্ত্রীর! কী হবে এবার?

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকারের অর্থানুকূল্যে ২০১৮ সালে বিশ্বভারতীতে এই বাংলাদেশ ভবন তৈরি হয়েছিল, যা উদ্বোধন করতে এসেছিলেন তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছর ২২ শ্রাবণ গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ অনুষ্ঠান পালিত হয় বিশ্বভারতীতে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি হয় বৃক্ষরোপণ। এবার সেই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল তুঙ্গে।

আরও পড়ুন: সীমান্তে তুমুল সতর্কতা, বন্ধ চেকপোস্ট! মাথায় হাত ‘ওদের’, কবে ফিরবে সেই দিন?

তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠক ডাকেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে সমগ্র অনুষ্ঠানটি স্থানান্তরিত করা হবে ৷ অনুষ্ঠানটি হবে উপাসনা গৃহের বিপরীতে পুরানো মেলার মাঠে। সেই মতো বুধবার ২২ শ্রাবণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। তবে বাইশে শ্রাবণ অনুষ্ঠানের মাঝেও যেন মন ভাল নেই ওপার বাংলা থেকে আগত বাংলাদেশি পড়ুয়াদের।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত উদ্বেগে বিশ্বভারতীতে পঠনরত বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা। দেশ, পরিবার নিয়ে অত্যন্ত বিচলিত অবস্থায় তাঁরা দিন কাটাচ্ছেন। বাইরে পড়াশোনা করতে এসে দেশের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে, এমনটা তাঁরা কল্পনাও করতে পারছেন না। তাঁদের একটাই প্রার্থনা, দেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক।‌ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সর্বতোভাবে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।‌ কিন্তু, দেশের অবস্থা ভেবে কার্যত দিশেহারা অবস্থা ‘সোনার বাংলা’র পড়ুয়াদের।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সংরক্ষণ রাখা যাবে না, এই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয় ছাত্র আন্দোলন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসিনা সরকারের নির্দেশে নামানো হয় সেনাবাহিনী। সোমবার গণ অভ্যুত্থানের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তড়িঘড়ি বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন শান্তিনিকেতনে থাকা ওপার বাংলার পড়ুয়ারা।এক পড়ুয়া জানান, ‘দেশের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের মনে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। পরিবারের সঙ্গেও সেভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না। আমরা চাই, দেশ দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক।’

সৌভিক রায়