পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্তর্গত কাটোয়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকাতে এখনও ধান জমিতে জমে রয়েছে জল। বীজতলা সহ ধানের চারা রোপণ করা জমি এখনও পর্যন্ত জলের নীচে রয়েছে। যার জেরে কৃষকদের মধ্যে শুরু হয়েছে দুশ্চিন্তা। কৃষকরা জলের তলায় থাকা ধানের বীজ, চারা পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
ব্যাপক হারে বৃষ্টিপাত এবং বিভিন্ন নদীর জল কাটোয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন করে তুলেছিল। তবে তুলনামূলক ভাবে নীচু এলাকায় এখনও জল জমে রয়েছে। এরই মধ্যে আমনের জন্য সদ্য রোওয়ানো হয়েছে জমি। কিন্তু জলে ডুবে যাওয়ায় তা পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। নীচু এলাকায় দ্রুত জল নামছে না। ফলে সেইসব এলাকার চাষিদের ফের বীজতলা তৈরি করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে চাষের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষকদের একাংশ। কাটোয়া ১ ব্লকের এডিও আজমীর মণ্ডল জানিয়েছেন,”এখনও বহু জমি থেকে জল নামেনি৷ তবে জল নেমে গেলে আর বীজ পাওয়া গেলে এখনও রোওয়া যাবে৷”
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিবছর এই সময় প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। তার মধ্যে কাটোয়া ১ ব্লক এলাকায় ৬০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জল জমে আমন ধানের চারা দফারফা হয়েছে৷ কাটোয়া ১ ব্লকের বাঁধমুড়ো, করজগ্রাম, আলমপুর, গাঁফুলিয়া এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ এছাড়া কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ, কড়ুই অঞ্চলে বেশি ক্ষতি হয়েছে৷ কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের বহু এলাকায় জল জমে ধানের চারা পচে গিয়েছে৷ সবমিলিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন ধান চাষিরা। কাটোয়া মহকুমার দুই কৃষক সাধন পাল, সন্তু হাজরা বলেন,”জল নেমে গেলে নতুন করে ধানের বীজ পাওয়া মুশকিল৷ সেক্ষত্রে আবার দ্বিগুন খরচ করে আর বীজতলা তৈরি করা সম্ভব নয়৷ আমাদের সব শেষ হয়ে গেল এবার৷”
কাটোয়া ২ ব্লকের ব্রম্ভানী নদী ছাপিয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি এলাকার কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের আমডাঙ্গা, মুস্থলী, পাঁচবেড়িয়া, শ্রীবাটি পঞ্চায়েতের চাণ্ডুলি সহ বেশ কয়েকটি এলাকার জমি জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি কাটোয়া ১ ব্লকের করজগ্রাম, আলমপুর প্রভৃতি এলাকায় জমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া মঙ্গলকোটে কুনুর নদী ছাপিয়ে গিয়ে ওই এলাকায় বিস্তীর্ন এলাকার জমি প্লাবিত হয়েছে। জানা গিয়েছে, চানক অঞ্চলের জালপাড়া, সরুলিয়া, উজিরপুর, রামনগর, বালিডাঙ্গা এলাকায় একাংশ কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া কুনুরের জল পালিগ্রাম অঞ্চলের মাজিখাঁড়া মৌজাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবমিলিয়ে ধান চাষে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী