নয়া আবিষ্কার

Bangla News: বিশ্বজুড়ে বাঙালির জয়জয়কার! চার বছরের গবেষণায় ৩৪ ‘দানব’ রেডিও গ্যালাক্সি আবিষ্কার ৪ বিজ্ঞানীর! জানুন

পশ্চিম মেদিনীপুর: দীর্ঘ চার বছর ধরে দিন রাত এক করে পরিশ্রম। অবশেষে গবেষণায় সফল চার বাঙালি বিজ্ঞানী। তাঁদের নতুন আবিষ্কার চমকে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। প্রত্যন্ত জেলায় থেকে মহাবিশ্বে থাকা দৈত্যাকার রেডিও গ্যালাক্সির খোঁজ দিয়েছেন চার বিজ্ঞানী। যা অন্যান্য গ্যালাক্সির থেকে বেশ কয়েক গুণ বড়।

দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে নিরলস গবেষণায় মিলেছে এই সফলতা। একটা দুটো নয়, ৩৪টি জায়েন্ট গ্যালাক্সি বা দৈত্যাকার রেডিও গ্যালাক্সি আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। বিজ্ঞান এবং গবেষণার জগতে চার বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কার প্রশংসনীয়। প্রায় সম্পূর্ণই দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার।

আরও পড়ুন: মৃতদেহ ‘বিক্রি’! সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ! মামলা হাইকোর্টেও

মহাবিশ্বের অন্ধকারে এখনও লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য নাম না জানা মহাজাগতিক বস্তু, যা এখনও আবিষ্কার হয়নি। যা সাধারণ চোখে দেখা যায় না। তাঁদেরই অন্যতম হল জায়ান্ট রেডিও সোর্স (GRS) গ্যালাক্সির। সাধারণ দৃষ্টিতে এই সকল সুপ্রাচীন দৈত্যাকার গ্যালাক্সিগুলো দেখা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন হয় বেতার তরঙ্গ বা ওয়েভ লেন্থ। সেই বেতার তরঙ্গের মধ্য দিয়ে সুপ্রাচীন ৩৪টি দৈত্যাকার গ্যালাক্সির খোঁজ মিলেছে। নতুন এই আবিষ্কার যা মহাকাশ বিজ্ঞানে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।

আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১,২৫,০০০ টাকা, যশস্বী স্কলারশিপ জানেন তো? কীভাবে আবেদন জানুন

প্রায় বছর চারেক ধরে অজানার পথে হেঁটেই বাঙালি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল খোঁজ দিয়েছেন ৩৪টি নতুন দৈত্যাকার রেডিও গ্যালাক্সির। এই কাজে পুনে শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তরে খোদাদ গ্রামের কাছে অবস্থিত টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (TIFR)-এর অধীন ন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (NCRA) সেন্টারে থাকা ৩০টি বিশেষ রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয়েছে, যাদের পরিভাষায় জায়ান্ট মিটারওয়েভ রেডিও টেলিস্কোপ (GMRT) বলা হয়ে থাকে।

যার প্রত্যেকটির ব্যাস ৪৫ মিটার। মেদিনীপুর সিটি কলেজের পিওর এন্ড অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স এর বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সব্যসাচী পালের নেতৃত্বে ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এই দলটি TGSS রেডিও স্কাই ম্যাপ ব্যবহার করে এই নতুন দৈত্যাকার রেডিও গ্যালাক্সিগুলি আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন।

এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দু’জন পিএইচডি গবেষক, সৌভিক মানিক ও নিতাই ভুক্তা এবং ছিলেন পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক সুশান্ত কুমার মণ্ডল।অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানী সব্যসাচী পাল জানিয়েছেন, মহাবিশ্বের এই দানবাকার রেডিও গ্যালাক্সিগুলো কয়েক লক্ষ আলোকবর্ষ জুড়ে বিস্তৃত, যা পরপর ২০-২৫ টি মিল্কিওয়েকে সারিবদ্ধ করার সমতুল্য। তাদের সুবিশাল আকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও আশ্চর্যের।

এই সুবিশাল গ্যালাক্সিগুলো থেকে নির্গত বেতারতরঙ্গ পর্যালোচনা করে চার বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় এই আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। এই ধরনের জায়ান্ট রেডিও গ্যালাক্সিগুলি শনাক্ত করা চ্যালেঞ্জিং কারণ দুটি লোবের সংযোগকারী সেতুটি প্রায়শই দৃশ্যমান হয় না। এই আবিষ্কারটি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির (AAS) অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল সাপ্লিমেন্ট সিরিজে (ApJS) প্রকাশিত হয়েছে। রেডিও গ্যালাক্সির বিবর্তন, গ্যালাক্টিক ডাইনামিক্স এবং ইন্টারগ্যালাক্টিক মিডিয়াম সমন্ধে সম্যক ধারণা পাওয়ার জন্যে এই ধরণের গবেষণা আদর্শ।

রঞ্জন চন্দ