প্রতীকী ছবি

Jhargram News: জঙ্গলমহলে হাতি মৃত্যুর ঘটনার নয়া মোড়, গ্রেফতার দুই হুলা পার্টির সদস্য

ঝাড়গ্রাম: যখন আর.জি কর ঘটনা নিয়ে চারিদিকে প্রতিবাদ, তখনই রাজ্যের জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামে ঘটে ভয়াবহ ঘটনা। জ্বলন্ত শলাকা বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এক স্ত্রী হাতির।অভিযোগ উঠে, হাতি তাড়াতে গিয়ে হুলা পার্টির সদস্যের ছোঁড়া জ্বলন্ত শলাকা বিদ্ধ হয়ে কাতর যন্ত্রণায় মৃত্যু হয় হাতিটির। একাধিক প্রশ্ন উঠে। সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি পথে নেমে প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে এবার জঙ্গলমহলে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। গ্রেফতার দুইজন। আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের সকালে দুবরাজপুর হয়ে শাবক সহ পাঁচটি হাতির একটি দল ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগরপল্লী এলাকায় ঢুকে পড়ে। হাতির দলে থাকা একটি পুরুষ হাতির আক্রমণে একজন শহরবাসীর মৃত্যু হয়। তারপরেই বন দফতর ঘুম পাড়ানি গুলি করে পুরুষ হাতিটিকে পাকড়াও করে জঙ্গলে ছেড়ে দেয়। বাকি চারটি হাতি আশ্রয় নেয় নতুন জেলা শাসকের অফিসের পাশে থাকা পরিত্যক্ত প্রাণিসম্পদ দফতরেরপাঁচিল ঘেরা একটি ছোট্ট জঙ্গলে।

আরও পড়ুন: এই গাছের পাতা নাকি ‘জাদুকরী’! আর প্রয়োজনই পড়বে না বিউটি পার্লার যাওয়ার! জানুন শুধু একবার

হাতি দেখার জন্য শহরবাসীর ভিড় উপছে পড়েছিল চারিদিকেই। এই অবস্থায় বনদফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সূর্যের আলো নামার পর এই চারটি হাতিকে ড্রাইভ করে জঙ্গলে পাঠানো হবে। কিন্তু বিকেলের পর চিত্রটা বদলে যায়। হুলা পার্টির সদস্যরা হাতি গুলিকে জঙ্গলে পাঠানোর জন্য কাজে নেমে পড়ে। দলটির সঙ্গে শাবক থাকায় স্ত্রী হাতিটি উত্তেজিত অবস্থায় ছিল।

হাতিটিকে বাগে আনার জন্য হুলা পার্টির এক সদস্য পরিত্যক্ত একটি একতলা বাড়ির উপর উঠে দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রীর হাতিকে জ্বলন্ত শলাকা ছুড়ে মারে, এমনই অভিযোগ সামনে আসে।জ্বলন্ত শলাকাটি হাতিটির মেরুদন্ডে গিয়ে আটকে যায়। মেরুদন্ডে জ্বলন্ত হুলার শলাকা ঢুকে যেতেই কাতর চিৎকার শুরু করে স্ত্রী হাতিটি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার পেছনের দুটি পা অকেজ হয়ে যায়।

তারপরেই দীর্ঘ চেষ্টার পর নিজে শুঁড় দিয়ে শলাকাটিকে ধরে শরীরের বাইরে থেকে বার করে ছুড়ে ফেলে স্ত্রী হাতিটি। কাতর চিৎকার করতে করতে হামাগুড়ি দিতে থাকে। এই অবস্থায় হাতিটি অচৈতন হয়ে গেলে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার পরের দিন ১৬ আগস্ট হাতেটির মৃত্যু হয়। ১৭ আগস্ট হাতিটির ময়নাতদন্ত হয়।

ঘটনায় ঝাড়গ্রাম থানায় এফআইআরও করা হয়েছিল বন দফতরের পক্ষ থেকে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বন্যপ্রাণী হত্যার ধারায় ২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করে বন দফতর। ধৃত দুইজনের নাম অজয় মাহাতো ও দীপক মাহাতো।

অজয়ের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার রাজাবাসা ও দীপকের বাড়ি লাউড়িয়াদাম গ্রামে। দুজনই হুলা পার্টির সদস্য।বুধবার সকালে দুজনকে পেশ করা হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে। তাঁদের বিরূদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭২ এর ৯ নম্বর ধারায় ( বন্যপ্রাণী হত্যা) গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনার তদন্তের জন্য দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে পায় ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ।তবে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে সকলে।

রঞ্জন চন্দ