লেখা বই হাতে মন্মথনাথ গড়ায় 

Bangla Video: অবসর জীবনেও থেমে নেই, প্রাক্তন শিক্ষকের এই গুণ আপনাকে অবাক করবে

পশ্চিম মেদিনীপুর: দীর্ঘ ৩৮ বছরে শিক্ষকতা জীবন। এর মধ্যে ২০ বছর দায়িত্ব সামলেছেন প্রধান শিক্ষকের। দশ বছর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং দু’বছর সহ-সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। রাজনীতির ময়দানে পা রাখলেও তিনি আপাদমস্তক বইপ্রেমী হিসেবেই থেকে গিয়েছেন। সাহিত্যচর্চার হাতে খড়ি হয়েছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত হন। এরপর বিদ্যালয় জীবন, কলেজ জীবনে একাধিক লেখালেখিও করেছেন।

আরও পড়ুনঃ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আন্দোলন তুলে নিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা

সংস্কৃত এবং বাংলা বিষয়ে দক্ষতা থাকার পরেও তিনি ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান সহ বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে ভালোবাসেন। শুধু ছাত্র জীবন নয়, কর্মজীবনে এসেও তিনি লিখেছেন নানা লেখা। তবে কর্মজীবন শেষ করে অবসর জীবন যেভাবে কাটাচ্ছেন জানলে অবাক হবেন, শ্রদ্ধায় মাথা নত হবে আপনার। বাংলা-ওড়িশা সীমানা এলাকায় থাকেন মন্মথনাথ গড়াই। চাকরিও করেছেন সীমান্তবর্তী এলাকা দাঁতনের দাঁতন হাইস্কুলে। রাজনৈতিক জীবনে দক্ষতার সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দায়িত্ব। দাঁতন থেকেই নির্বাচিত হয়েছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে। ওড়িশা সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি হওয়ার কারণে প্রথম থেকেই দক্ষতা ছিল বাংলা এবং ওড়িয়া ভাষায়। তিনি এক চিকিৎসকের লেখা চারটি ওড়িয়া ভাষার বই বাংলায় অনুবাদও করেছেন।

১৯৭০ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দাঁতন হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক এবং ১৯৮৮ থেকে ২০০৮ প্রায় ২০ বছর তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি বিভিন্ন পত্রিকা সম্পাদনা, স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলী সদস্যের পাশাপাশি তিনি নিজেও লিখেছেন বই। সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা বিষয়ক বই, কবি জীবনানন্দ দাশের সম্পর্কে লেখা বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও কবিতা এবং প্রবন্ধের আরও দুটি বই তিনি প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশার বালেশ্বর জেলার প্রখ্যাত চিকিৎসক চৌধুরী সত্যব্রত নন্দের চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর লেখা বিভিন্ন বাস্তব গল্প সমূহের চারটি বই তিনি ওড়িয়া ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদ করেন।

প্রায় ১৬ বছর তিনি কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে বাড়ির আলমারি জুড়ে শুধু বই। দিনের বেশিটা সময় কাটান বইয়ের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, পার্শ্ববর্তী কলেজ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁর কাছে আসেন বিভিন্ন বিষয় জানার জন্য। শুধু বই পড়া নয়, এখনও নিয়ম করে লেখেন নানা প্রবন্ধ, কবিতাও। স্বাভাবিকভাবে বই পড়ে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন এই প্রধান শিক্ষক এবং তাঁর গুণ আপনাকে অবাক করবে।

রঞ্জন চন্দ