টানা ফোনে কথা বলতে গিয়েই তদন্তকারীদের নজরে, জালে বিমানবন্দরের কর্মীও

Delhi Airport: টানা ফোনে কথা বলতে গিয়েই তদন্তকারীদের নজরে, জালে বিমানবন্দরের কর্মীও; সব মিলিয়ে গ্রেফতার ৮ জন

Delhi Airport: ফোনে টানা কথা বলে যাওয়ার মাসুল গুনতে হল কিছু বিমানযাত্রীকে। আসলে দীর্ঘ সময় ধরে অনর্গল ফোনে কথা বলার কারণে অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটল। যার ফলে আপাতত ওই যাত্রীদের ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঘটনা। কিন্তু বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। কারণ যাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে একজন বিমানকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এবার পরপর ২ জনকে ধরা হয়েছে। এই ঘটনায় মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু ফোন কলের সঙ্গে এই গ্রেফতারির সম্পর্কটা ঠিক কী!

আরও পড়ুন– কান্দাহার থেকে ফেরার সময় জঙ্গিদের কাছ থেকে এই বিশেষ ‘উপহার’ পেয়েছিলেন অজিত ডোভাল; এরপর সেটা নিয়ে যা করেছিলেন তিনি…

বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন যে, সকাল ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-এ ইনস্পেক্টর ধীরজ কুমারের তত্ত্বাবধানে সিআইএসএফ ইন্টেলিজেন্সের একটি দল নিয়মমাফিক টহল দিচ্ছিল। এই দলে ছিলেন সিআইএসএফ সাব-ইনস্পেক্টর অনুজ কুমার, হেড কনস্টেবল সন্দীপ কুমার এবং কনস্টেবল মনিক কুমার। ইতিমধ্যেই চার নম্বর গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা চার জন যাত্রীর উপর নজর যায় ওই তদন্তকারী দলটির। আর ওই যাত্রীদের চোখেমুখে ভয় আর দ্বিধার আভাস যেন অনায়াসে পড়ে ফেলেন তদন্তকারীরা।

তাঁরা দেখেন, অনবরত ফোনে কথা বলছেন ওই যাত্রীরা। দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা যেন কারও কাছ থেকে নির্দেশ পাচ্ছেন। এরপর সিসিটিভি-র মাধ্যমে ওই যাত্রীদের উপর নজর রাখতে বলা হয় সিকিউরিটি অপারেশন কন্ট্রোল রুমে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর অজিত কুমারকে। এর কিছু পরেই এক যাত্রীর ফোন বেজে ওঠে এবং তাঁরা চার নম্বর গেটে প্রবেশ করেন। সমস্ত কিছু সারার পরে সিকিউরিটি হোল্ড এরিয়ায় পৌঁছন।

আরও পড়ুন– ট্রেনের এসি কোচ থেকে উদ্ধার ২ কেজি সোনা, নগদ ৫ লাখ টাকা ! তারপর কী ঘটল?

ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা বুঝে যান, কিছু সমস্যা রয়েছে। নজরদারি করে জানা যায় যে, ওই চার যাত্রী বোর্ডিং গেট নম্বর ১৫-য় প্রথম পৌঁছেছিলেন, এরপর তাঁরা যান ২০বি-র দিকে। আর তাঁদের সঙ্গে দেখা যায় এয়ারলাইন গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের এক কর্মীকেও। এরপর তাঁদের পাকড়াও করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তদন্তকারী দলটি চার যাত্রীকে আটক করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। কথোপকথনের সময় তাঁরা অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলতে থাকে। যার ফলে তাঁদের আটক করে জেরা শুরু হয়। জানা যায়, ওই চার জনের নাম হল হরমনজ্যোত সিং, জয়বীর সিং, দিলশের সিং এবং কুলবিন্দর সিং। আর আটক হওয়া বিমানবন্দরের কর্মীর নাম হল সলমন আব্বাসি।

ধৃতদের কথা শুনে রীতিমতো কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে তদন্তকারীদের। জানা গিয়েছে যে, এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১১৩ উড়ান ধরে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে বার্মিংহাম যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। আর তাঁদের এই সফরের ব্যবস্থা করেছিলেন ট্রাভেল এজেন্ট পরমজিৎ সিং। বার্মিংহামে পাঠানোর শর্তে এই পরমজিৎই ওই চার জনের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২২ লক্ষ টাকা করে দাবি করেছিলেন। অ্যাডভান্স বাবদ চারজন ২০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। এরপর বার্মিংহাম পৌঁছে বাকিটা দেওয়ার কথা ছিল। চার জনকে বার্মিংহাম পাঠাতে কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেটেরও ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন পরমজিৎ। এর মাধ্যমে অভিবাসন পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছিল। আর ভাগ্যক্রমে উড়ান ধরার আগেই সকলকে ধরতে পেরেছে সিআইএসএফ।