বাঁকুড়া: লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের তরফ থেকে। এবং তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। দক্ষিণ দামোদরের যে জেলাগুলি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া। বাঁকুড়ার বড়জোড়া এবং সোনামুখী চলে গেছে এক বুক জলের তলায়। অবস্থা খুবই খারাপ। বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলায় উপস্থিত হলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।
সভার মাধ্যমে খতিয়ে দেখলেন কীভাবে বন্যার ত্রাণ এবং বন্যা সামাল দেওয়ার কাজ চলছে জেলা জুড়ে। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, প্রতিমন্ত্রী জোৎস্না মান্ডি এবং জেলা শাসক সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
রাজ্য আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, এখনও পর্যন্ত বন্যায় বিপর্যস্তদের রিলিফ শেল্টার করা হয়েছে ২০৯ টা। ১২৭০৯ জন বন্যায় বিপর্যস্তদের ক্যাম্পে ইতিমধ্যেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া জেলার মোট ছটি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত, শালতোরা, বড়জোড়া, পাত্রসায়ের, সোনামুখী, ইন্দাস এবং মেজিয়া। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী গোটা বাঁকুড়া জেলায় বন্যার কারণে ঘর ভেঙেছে ৬২০টি। এবং আংশিক ঘর ভেঙেছে ২৪০২ টি। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এর তরফ থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
বাঁকুড়ার যে ৬টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই ব্লক গুলির অধিকাংশ পঞ্চায়েত এলাকা জলের তলায়। রাজ্যের মন্ত্রী বাঁকুড়ায় সভা করতে এসে বলেন ডিভিসি প্রতিবছর রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে জল ছাড়ে। এই বছরও সেই একই ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক ডিভিসির তরফ থেকে যে জল ছাড়া হয়েছে, সেই খবর বা আগাম পূর্বাভাস রাজ্য সরকারের কাছে নেই।
রাজ্য এবং কেন্দ্রেীয় কোঅর্ডিনেশন কেন তৈরি হচ্ছে না? সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এর উত্তর একমাত্র কেন্দ্রই দিতে পারে।” কৃষি প্রধান এলাকা গুলিতে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষীরা, কীভাবে তাদের পাশে দাঁড়াবেন সরকার? সেই প্রশ্নের উত্তরে মলয় ঘটক বলেন, “কৃষকদের জন্য রয়েছে ক্রপ ইনসিওরেন্স। পশ্চিমবঙ্গে এমন একটি রাজ্য যেখানে ক্রপ ইনসিওরেন্স-এর প্রিমিয়াম কৃষকদের দিতে হয় না। এই প্রিমিয়াম রাজ্য সরকার দেয়। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরা এই বীমা থেকে নিজেদের ক্ষতিপূরণ পাবেন।” অবস্থা খারাপ। জেলা সাতটি ব্লক রীতিমতো জলের তলায়। এই অবস্থায় কোথায় কতটা ক্ষতি হয়েছে তাও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে এই পরিস্থিতির উন্নতি কখন কিংবা কীভাবে হবে সেই প্রশ্ন বুকে বেঁধে অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
—- নীলাঞ্জন ব্যানার্জী