নদিয়ার ১১১ ফুট দুর্গার অসুর

Durga Puja 2024: এত ‘বড়’ সত্যি! দেশপ্রিয় পার্কের চেয়েও অনেক অনেক বড় দুর্গা ঠাকুর বানাচ্ছে নদিয়ার এই ক্লাব, জটিলতা কাটিয়ে কবে উদ্বোধন?

রানাঘাট: নদিয়ার রানাঘাট কামালপুর অভিযান সংঘ এ বছরের গোড়ার দিকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিশ্বের সব থেকে উচ্চতার দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে তারা তাক লাগাবেন। আর সেই ভিত্তিতে রাত-দিন এক করে অক্লান্ত পরিশ্রমে পেশাদারী শিল্পীদের কঠোর পরিশ্রমে তা প্রায় সম্পন্নের মুখে।

পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে স্থগিত হল শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। প্রশাসন জানিয়েছে, এত বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করা যাবে না। আর এই ফরমান জারি হওয়ার পুজো উদ্যোক্তারা হতাশ। অন্যদিকে, হতাশ উৎসবপ্রিয় নদিয়াবাসী। তবে হাল ছাড়তে নারাজ পুজো উদ্যোক্তারা। এত কষ্ট করে দর্শনার্থীদের সামনে তাদের শিল্পকর্ম তুলে ধরতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ নবরাত্রির ৯ দিন, কবে কোন রঙের পোশাক পরলে শুভ? জ্যোতিষ মানলে জীবনে সুখ-অর্থের জোয়ার

এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থাশীল। আদালত মানুষের সার্বিক আগ্রহের কথা ভেবে প্রতিমা সকলকে দর্শনের সুযোগ করে দেবেন বলেই আশা রাখছেন। তবে আপত্তির কারণ হিসেবে তাদের কিছু বলা হয়নি। হঠাৎই পুলিশ পিকেট বসেছে এবং তাদের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, তিনি যেন এই প্রতিমা সাধারণের দেখার অনুমতি দেন। এতে বাংলার মুখ উজ্জ্বল হবে বলেই তাদের আশা।

নিরাপত্তাজনিত কারণ কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা জানান, প্রয়োজনে খতিয়ে দেখা হোক তাদের ব্যবস্থাপনা। ৪০ বিঘে একটি সুবিশাল মাঠের উপর লোহার পোল, বিম, বাঁশের খাচা এ সমস্ত দিয়ে প্রতিমা দাঁড় করানো হবে, মাথার উপরে কোন ছাউনি থাকবে। সিসি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত ভলেন্টিয়ার থাকবে। পাশাপাশি, শহরের প্রচণ্ড ভিড়ের সম্ভাবনাও গ্রামে নেই বলে দাবি। কর্মকর্তাদের দাবি, সবদিক খতিয়ে দেখে অসুবিধা না থাকলে তাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন করুক প্রশাসন।

আরও পড়ুনঃ দার্জিলিংয়ের ভিড় এড়িয়ে ডেস্টিনেশন হোক কার্শিয়ংয়ের এই অচেনা জায়গা! আজীবন মুগ্ধতা থেকে যাবে

অন্যদিকে, কৃষকরা জানাচ্ছেন তারা এই মরশুমে মূল্যবান চাষ বন্ধ রেখেছেন শুধুমাত্র এলাকার সুনাম বৃদ্ধি হওয়ার জন্য, নতুন কিছু করার জন্য। তাই কোনও বড় স্পনসর ছাড়াই শুধুমাত্র মানুষের সহযোগিতায় এই পুজো সকলের হয়ে দাড়িয়েছে। এলাকার মহিলারা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে আসছেন মণ্ডপ এবং প্রতিমা তৈরি দেখতে। অনেকেই ফোন করে বলে রেখেছেন ঠাকুর দেখতে আসবেন। নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখন থেকেই আনাগোনা শুরু করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাদের অনুরোধ, মানুষের আবেগের মূল্য দেওয়া হোক।

মেলায় বিভিন্ন ছোট ছোট দোকানেরা জানাচ্ছেন, পুজোর সময় যা আয় হয়, তাতে ভাল সংসার চলে। এমন পুজো এলাকায় হওয়ায় লাভের আশায় বুক বেঁধেছিলেন সকলে। এলাকাতেই বেশ কিছুদিন যাবত মানুষজন আনাগোনার কারণে বেচা কেনা ভাল হবে। সুবিশাল এই প্রতিমা নির্মাণকারী শিল্পী জানিয়েছেন, তারা এই কাজ নতুন করছেন এমন নয়, এর আগেও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কাজকর্মে এবং বাংলার সংস্কৃতি শিল্পকর্ম তুলে ধরেছেন। তবে এবারে তাদের এই নিদর্শন তুলে ধরলে অনেক শিল্পী উৎসাহিত হতেন।

Mainak Debnath