জমিদারি আর নেই, জৌলুসও ফিকে...৩০০ বছরের পুরনো ‘মিত্র বাড়ির পুজো’ বাঁচিয়ে রেখেছে প্রাচীন প্রথা

Durga Puja 2024: জমিদারি আর নেই, জৌলুসও ফিকে…৩০০ বছরের পুরনো ‘মিত্র বাড়ির পুজো’ বাঁচিয়ে রেখেছে প্রাচীন প্রথা

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রাচীন ইতিহাসে কান পাতলা শোনা যায় নানান ঐতিহাসিক ঘটনা। জেলা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু জমিদার বাড়ি। জমিদার বাড়ির দুর্গা পুজোর পিছনে রয়েছে নানান ইতিহাস। অন্যতম একটি জমিদার বাড়ি হল জয়নগরের মিত্রবাড়ি। ইতিহাসের হাত ধরে এখনও সাড়ম্বরে হয়ে আসছে জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়ির। ১১৩৬ সাল থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়িতে চলে আসছে দুর্গাপুজো ৷

জমিদারি প্রথা না থাকলেও অতীতের নিয়ম মেনে প্রতিবছর পুজো হয় এখানে । কালের নিয়মে জৌলুস কিছুটা কমলেও পুজোর আচার-আচরণে এতটুকুও খামতি রাখেন না জমিদার বাড়ির সদস্যরা। জমিদার বাড়ির বিশাল ঠাকুর দালানে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর দু‘দিন পর থেকেই মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় ৷ তৎকালীন সময়ে জমিদারি প্রথা থাকার সুবাদে সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, জয়নগর, কুলতলী, গোসাবা, নামখানা, রায়দিঘি, মথুরাপুর ইত্যাদি এলাকা জুড়ে জমিদারি প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করেছিল মিত্ররা।

আরও পড়ুন: দেখলেই নাক সিঁটকান! এই সবজি খেয়েই ৮৮ তেও ফিট ধর্মেন্দ্র, দামও একেবারে কম, নাম জানলে অবাক হবেন

অতীতে পুজোর সময় জমিদার বাড়ি মানুষের ভিড়ে গমগম করত। জমিদার বাড়িতে প্রজারাই পুজোর যাবতীয় জিনিসপত্র পাঠাতেন। কিন্তু কালের নিয়মে জমিদারি প্রথার অবসান ঘটেছে। অতীতের সেই জৌলুস হারিয়েছে মিত্র বাড়ির পুজো। পূর্বে সাতটি করে পাঠা বলির ব্যবস্থা থাকলেও, বর্তমানে দুটি করে পাঠা বলি হয়। বাড়ির সামনেই সুবিশাল জলাশয়ে কলা বৌ স্নান থেকে শুরু করে প্রতিমা বিসর্জন সবটাই করা হয়ে থাকে।

কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা ভিন রাজ্যে ও ভিনদেশে থাকলেও, পুজোর চারদিন সকলে একত্রিত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন প্রবীণ থেকে নবীন সদস্যরা। গত ৩৫০ বছরেও বেশি সময় ধরে এই প্রথা মেনেই চলে আসছে মিত্র বাড়ির দুর্গাপুজো। এখনও বনেদিয়ানায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখেন জয়নগরের এই মিত্ররা।

আরও পড়ুন: মোবাইলের নেশায় আসক্ত বাড়ির খুদে? এই ৫ টিপস্ কাজে লাগান, নিজে থেকেই ফোন দেখা ছেড়ে দেবে সন্তান

আনুমানিক প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের বেশি পুরনো পুজোয় এক সময় প্রতিদিনই মহিষ বলি হত। পরে মোট ন’টা পাঠা বলি হত। তবে এখন মাত্র দুটো বা তিনটে পাঠা বলি হয়।এই বাড়ির পুজোতে কোনও অন্ন ভোগ হয় না। পরিবর্তে লুচি বা শুধুমাত্র ফল, মিষ্টির ভোগ হয়। বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা বাড়ির প্রতিমা গড়ে আসছেন এখানে।প্রতিবছর বহু মানুষ ভিড় করেন জমিদার বাড়ির এই পুজো দেখতে।

সুমন সাহা