নয়ন ঘোষ, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান : একটা সময় ছিল, যখন ঘরে ঘরে সাজানো থাকত রেডিও। বাড়ির বয়স্কদের রেডিও না শুনলে অনেক সময় ঘুম আসত না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের বিনোদনের মাধ্যমে বদল এসেছে। রেডিওর জায়গা দখল করেছে টেলিভিশন। তারপর বর্তমানে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। যার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছিল রেডিও। কমেছিল কদর।
বিগত এক দশকের বেশি সময়ে রেডিওর কদর কিছুটা দেখা যেত মহালয়ার আগে। তবে বিগত দু’বছরে সেই ছবিতে খানিকটা বদল এসেছে। রেডিওর প্রতি মানুষের আবেগ, নস্টালজিয়া আবার জীবন্ত করে তুলছে রেডিওকে। ধীরে ধীরে আবার বাড়ছে চাহিদা। পুরানো রেডিও প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন সংস্থাও রেডিও বিক্রির বাজারে নেমেছে। অন্যদিকে রেডিও যাঁরা মেরামত করতেন, তাদের ব্যস্ততাও আবার বাড়ছে ধীরে ধীরে।
বিএসসি পাশ করার পর থেকে বিগত তিন দশকের বেশি সময় ধরে রেডিও মেরামত এবং বিক্রির পেশায় রয়েছেন অভয় কুণ্ডু। ৭৬ বছর বয়সি এই ব্যক্তির দোকানে এক সময় দুজন কর্মচারীও ছিলেন। তবে ধীরে ধীরে রেডিওর চাহিদা কমতে থাকায় ফাঁকা হতে শুরু করে তার দোকান। একটা সময় এমন ছিল, যখন শুধু দোকানে বসে থাকা হত। কিন্তু কাজ ছিল না। তবে বিগত দু’-তিন বছরে সেই ছবিটার খানিকটা বদল হয়েছে। অনেকেই আবার রেডিও কিনছেন। যাদের বাড়িতে বহু পুরনো রেডিও অযত্নে রাখা ছিল, সেগুলিও আবার মেরামত করাচ্ছেন অনেকে।
অভয় বলছেন, টেলিভিশন এবং রেডিওর সাউন্ডের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যারা নিয়মিত রেডিও শোনেন, তারা রেডিওর প্রতি ভালবাসা কখনও ছাড়তে পারবেন না। অভয়বাবু নিজেও নানারকমের পুরানো রেডিও সংরক্ষণ করে রেখেছেন। তিনি বলছেন, বর্তমানে আবার কিছুটা ব্যস্ততা তাঁর বেড়েছে। নিয়মিতভাবেই এখন রেডিও মেরামত করার জন্য অনেকে আসেন। তবে মহালয়ার আগে চাহিদা আরও খানিকটা বেড়ে যায়। তিনি বলছেন, হারিয়ে যেতে বসা রেডিও যেন আবার নবজীবন পাচ্ছে। রেডিওর প্রতি মানুষের আবেগ এই ছবিটার বদল সৃষ্টি করছে। যা দেখে তিনি আনন্দিত।