মন্ডা

Bengal Sweets: ৩ টাকা দাম, স্বাদ নিতে আসতেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিও! বাংলার কোন মিষ্টি জানেন?

বীরভূম: তিন টাকায় হয়তো মিলবে তিনটে লজেন্স, অথবা তিনটে দেশলাই কাঠি। তাছাড়া এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে আর কী পাবেন তিন টাকায় বলতে পারেন! তবে বীরভূমে মাটিতে দাঁড়িয়ে এই কথা চিন্তা করলে কিন্তু আপনি একদম ভুল করবেন।

তবে বীরভূমের কীর্ণাহার বাজারে দাঁড়িয়ে এটা কোনও ভাবেই ভাববেন না। বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ১২ ফুট বাই ৬ ফুট একটি ছোট্ট দোকানে মিলবে মাত্র তিন টাকা দামের মন্ডা। দোকানের কর্ণধার দীনবন্ধু মণ্ডলের দুই পূর্বপুরুষের পুরনো ব্যবসা এই মন্ডা। মাত্র তিন টাকা দামের মন্ডা এখানে যেমন দামে কম তেমন সাধেও অতুলনীয় তাই লাইনও হয় দীর্ঘ সময় ধরে।

আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে বড় ধাক্কা, চাকরি নিতেই অনীহা এত প্রার্থীর! চাকরি না নেওয়ার কী এমন রহস্য?

কীর্ণাহারে নিজের জন্ম ভিটেবাড়িতে ফেরার পথে নিয়মিত মন্ডা কিনতেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এমনকী, তাঁর বাড়ির দুর্গাপুজোয় এখনও এই মন্ডাই প্রতি বছর ভোগে দেওয়া হয় নিয়ম মেনে।এই মিষ্টি কিনতে বোলপুর, নানুর, লাভপুরের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের মানুষও নিয়মিত ভিড় করেন। মাত্র তিন টাকা থেকে শুরু করে দশ টাকা পর্যন্ত এই মণ্ডা আপনার জিভের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে পারে।

আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য গুণ, হাজার হাজার টাকার ওষুধ নয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের নিখুঁত দাওয়াই কাঁচা কলা!

প্রসঙ্গত, আজ থেকে প্রায় ৬৫ বছর আগে বীরভূমের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির সংলগ্ন কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডে ছোট্ট দোকান দিয়েছিলেন দীনবন্ধু মণ্ডলের বাবা প্রয়াত মহাদেবচন্দ্র মণ্ডল। দোকান ছোট হলেও মন্ডার স্বাদ ও গুণমানে কোনও আপোস করেননি। আর সেই কারণেই আজও বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট্ট এই দোকানে মন্ডা কিনতে আসেন সকলে। বাবার কাছে মন্ডা তৈরি শিখেছিলেন দীনবন্ধু বাবু। বাবার তৈরি সেই শিক্ষা আজও পেশা হিসেবে ধরে রেখেছেন তিনি।

দীনবন্ধু বাবু জানান, মুনাফা কম রাখার কারণেই বিক্রি বাট্টা বেশি। প্রত্যেকদিন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়ে থাকে। তবে তার জন্য প্রত্যেক দিন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কেজি ছানা, এক থেকে দুই হাজার টাকার চিনি প্রয়োজন হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি গ্যাস ও  কয়েকজন কর্মচারীর মজুরি দিয়ে দিনের শেষে থাকে হয়তো হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। তবে গুণমানের সঙ্গে তিনি কোনওদিন আপোস করেননি বলে আজ পর্যন্ত তার দোকানে প্রায় প্রত্যেকদিন কয়েকশো ক্রেতার সমাগম ঘটে।

সৌভিক রায়