পূর্ব বর্ধমান: বিকল্প চাষ হিসেবে এবার রেশম চাষ করছেন পূর্ব বর্ধমানের এক ব্যক্তি। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ ব্লকের ভাণ্ডার টিকুরি এলাকার উমেশ দাস নামের এক ব্যক্তি, রেশম চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। উমেশ বাবুর প্রথম থেকেই ইচ্ছা ছিল প্রথাগত চাষের বাইরে এসে নতুন কোনও চাষ করার। চলতে থাকে খোঁজ খবর নেওয়া। পরবর্তীতে তিনি খোঁজ পান এই রেশম চাষের। তারপর ২০১৬ সালে সর্বপ্রথম তিনি এই চাষ করতে শুরু করেন। এখনও পর্যন্ত তিনি একটানা আট বছর ধরে এই চাষ করছেন।
এই প্রসঙ্গে উমেশ দাস জানিয়েছেন, ” অন্যান্য চাষ তো আমরা সব সময় করি যেমন ধান পাট কিন্তু এবার চিরাচরিত ফসলের বাইরে এসে নতুন কিছু করার ইচ্ছা ছিল। পরবর্তীতে আমি এই চাষের খোঁজ পাই। আমি জেনেছিলাম যে পুকুরপাড় অথবা ফাঁকা জমিতে রেশম গাছ লাগিয়ে এই চাষ করা যায়। ঘরের মধ্যেই এই চাষ হয় ঝড় বৃষ্টির চাপ কম থাকে একটা আলাদা উপার্জন এখান থেকে করা যায়।”একটা এগ্রিকালচার ট্রেনিংয়ে গিয়ে উমেশ বাবু এই চাষের খোঁজ পেয়েছিলেন। এর আগে তিনি ধান, পাট, সর্ষে-সহ অন্যান্য ফসল চাষ করতেন। তবে এখন এই চাষ করে তিনি অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন। এই চাষের জন্য প্রথমে ডিম সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তীতে ডিম থেকে পোকা জন্ম নিলে তারপর আস্তে আস্তে তুঁত পাতা খাইয়ে তাকে বড় করতে হবে।
২৫ থেকে ২৬ দিন পরে পোকা বড় হয়ে গুটি করবে। অন্যান্য ফসল চাষ করতে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই রেশম চাষে সমস্যা তুলনামূলক অনেক কম। মাঠের মধ্যে চাষ করতে হবে তুঁত গাছ। এবং সেই গাছের পাতা এনে বাড়িতে রাখা পোকাকে দিতে হবে। অন্যান্য চাষের থেকে এই চাষে লাভও অনেক বেশি। উমেশ বাবু আরও জানিয়েছেন, “১০০ পিস পোকা চাষ করতে গেলে এক বিঘা জমিতে তুঁত গাছ চাষ করতে হবে। সেই পাতা রেশম পোকাকে খাইয়ে মোটামুটি তিরিশ কেজি গুটি হবে। ৩০ কেজি গুটি হলে সেটা ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হতে পারে। এই চাষ বছরে পাঁচ বার করা যেতে পারে।”
কোনও চাষি এই চাষ করতে চাইলে তিনি নির্দিষ্ট এলাকার কৃষি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও বিস্তারিত যে কোনও তথ্য তিনি সেখান থেকেই জেনে নিতে পারবেন। উমেশ বাবুর কথায় এই রেশম চাষ অনেকটা লাভজনক। মাছ ধরার সুতো , জামাকাপড়, গাড়ির টায়ার-সহ আরও বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে রেশম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী