পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার এই ব্যক্তির কর্মকাণ্ড দেখলে অবাক হতে হবে। নিজের বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে তিনি যা কাজ করেছেন, তা সচরাচর সেভাবে চোখে পড়বে না। নিজের আস্ত চারচাকা গাড়িকে তিনি রূপান্তরিত করেছেন একটি খাবারের দোকানে। পূর্ব বর্ধমান জেলার দাঁইহাট-মালডাঙা রাস্তার উপর দিয়ে গেলেই, কামাল এবং জামড়ার মধ্যবর্তী স্থানে চোখে পড়বে এই দোকান। রাস্তার ধারে একটি বট গাছের নিচে রয়েছে দোকানটি। তবে দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন কোনও চারচাকা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। দোকানের যিনি কর্ণধার, তাঁর নাম নব দাস। বাড়ি জামড়া গ্রামে। যে চারচাকা গাড়িটিকে তিনি দোকানে রূপান্তর করেছেন, সেই গাড়িটি তাঁর  নিজের। তাতে চেপেই বহু জায়গায় গিয়েছেন তিনি। গাড়িতে বসিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন বহু জনকে।

বর্তমানে গাড়িটি চালু রয়েছে। কিন্তু এখন একটা আস্ত দোকান। আর তিনি এখানে ওখানে যাওয়ার জন্য এই গাড়িটিকে ব্যবহার করেন না। এখন শুধুমাত্র দোকান হিসেবেই ব্যবহৃত হয় এই গাড়ি। কী কারণ রয়েছে এর পিছনে? কেন লক্ষাধিক টাকার গাড়িকে তিনি দোকানে রূপান্তর করলেন? নব বাবু জানান, তাঁর এই চারচাকা গাড়ি আগে এক প্রশাসনিক দফতরে ভাড়া খাটত। গাড়ির বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে নতুন গাড়ি সেই দফতরে দেওয়ার জন্য বলা হয়। তবে নব বাবুর নতুন গাড়ি দেওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না। পরবর্তীতে সেই গাড়ি নিয়ে  তাঁর গ্রামে ভাড়া খাটতে শুরু করেন। তবে গাড়ির একদমই ভাড়া হচ্ছিল না। এদিকেউপার্জন না হলেও তাকে ইন্স্যুরেন্স, পলিউশন এবং ট্যাক্সের জন্য টাকা কিন্তু দিতেই হত। তাই তিনি ঠিক করেন গাড়ি ভাড়া খাটানো বন্ধ করে দেবেন। এবং গাড়ির মধ্যেই দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করবেন।

আরও পড়ুন: সন্দেশখালি কাণ্ডের পর প্রথমবার বসিরহাটে! শাহজাহান অস্বস্তি কাটাতে কী কৌশল নিলেন অভিষেক?

আরও পড়ুন: দর্শনীয় স্থানের ইতিহাস লেখা হোক ব্রেইল পদ্ধতিতেও দাবি শ্রীরামপুর চক্ষু সেবা কেন্দ্রর

সেই মতো তিনি মালডাঙার একটি গ্যারেজ থেকে  প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে চার চাকা গাড়িটিকে একটি দোকানের মতো তৈরি করেন। সেই থেকেই চলন্ত গাড়ির মধ্যেই শুরু হয় তার ছোট্ট খাবারের দোকানের ব্যবসা। তিনি বলেন, গাড়ি ভাড়া খাটিয়ে তিনি যা উপার্জন করতেন, তার থেকে এই ব্যবসা অনেক ভাল। বর্তমানে নব বাবু এই গাড়ি নিজে চালিয়ে নিয়ে রাস্তার ধারে বটতলায় এসে দোকান খোলেন। আবার রাতে বেলা দোকান নিয়ে চলে যান বাড়ি।

দোকানের মধ্যে বসে একা হাতে পুরোটাই তিনি একাই সামলান। তাঁর দোকানে পাওয়া যায় ঘুগনি মুড়ি, ডিম টোস্ট, ডিমের ওমলেট, স্পেশাল দুধ চা-সহ আরও বেশ কিছু আইটেম। প্রত্যেকদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত  ন’টা পর্যন্ত নববাবু তাঁর দোকান খোলা রাখেন। ইতিমধ্যেই এই ধরনের আধুনিক দোকান দেখে পথচলতি বহু মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছেন নব বাবুর চলন্ত দোকানে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী