পশ্চিম মেদিনীপুর: গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এটি। প্রতিটি বাড়িতেই মা ঠাকুমারা অবসরে করতেন এই কাজ। সুতো, সূচ নিয়ে বসে কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তুলতেন একাধিক সুন্দর সুন্দর ডিজাইন। বাংলার প্রতিটি গ্রামেই প্রচলন ছিল এই শিল্পকলার। হাতের নিপুনতায় ফুটে উঠত বিভিন্ন ছবি। তবে গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্য এখন স্বনির্ভর হওয়ার এক অন্যতম মাধ্যম। সেই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েছেন জেলার এক গৃহবধূ। নিজে স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি একাধিক বাড়ির মহিলাদের স্বনির্ভরতার পাঠ দিচ্ছেন তিনি। প্রতিমাসে বেশ ভাল আয় জুটছে এখান থেকে।
আরও পড়ুন- অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে? কোন ভিটামিনের ঘাটতি শরীরে, জানলে চমকাবেন! বড় ক্ষতির আশঙ্কা আছে কি?
গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য কাঁথা শিল্প। কিন্তু বর্তমান সমাজ উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলতে বসেছে প্রাচীন ঐতিহ্যের কাঁথা শিল্পকে। তবে মায়ের কাছ থেকে শিখে কাঁথা স্টিচ এমনকি এই কাঁথা শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এক মহিলা। পাশাপাশি এই কাঁথা শিল্পের মধ্য দিয়ে স্বনির্ভরতার দিশাও দেখাচ্ছেন তিনি। কাপড়ের উপর সুচ সুতো দিয়ে হাতের নিপুনতায় ফুটিয়ে তুলছেন একাধিক সুন্দর সুন্দর ছবি। শাড়ি, বেডশিট, টেবিল ক্লথ-সহ একাধির জিনিসের উপর তার হাতের ছোঁয়ায় যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। পুরানো ঐতিহ্যের কাঁথা শিল্প থেকে স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছেন এই মহিলা। নিজে যেমন স্বনির্ভর হচ্ছেন তেমনি কাথা শিল্পে অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করে স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- বলুন তো, পৃথিবী মহাশূন্য থেকে নীচে পড়ে যায় না কেন? উত্তর জানলে মাথা ঘুরে যাবে!
পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্যামচকের বাসিন্দা সঞ্চিতা দে। বেশ কয়েক বছর ধরে কাঁথা স্টিচের কাজ করে আসছেন তিনি।প্রসঙ্গত বর্তমান দিনে বিভিন্ন জামা কাপড়, শাড়ির উপরে কাঁথা স্টিচ দেখা যায় না বলেই চলে। তবে গ্রামীণ এলাকায় এই কাঁথা স্টিচের প্রচলন বেশ ছিল। তবে সঞ্চিতা তার মায়ের কাছ থেকে শিখে টিকিয়ে রেখেছেন এই শিল্পকে।
আরও পড়ুন- ৯ বছরে প্রথম! পাকিস্তানে পা ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের!
তিনি কাপড়, পাঞ্জাবি, জামা, কুর্তি সহ নানান জামাকাপড়ের উপরে কাঁথা স্টিচের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন নানা ছবি। ইতিমধ্যে অনলাইন এবং অফলাইন মাধ্যমে বিক্রির বন্দোবস্ত করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, সঞ্চিতা দে’র অধীনে বেশ কয়েকজন মহিলা কাঁথা স্টিচের কাজ করেন। এই কাঁথা স্টিচের কাজ করে আর্থিক স্বনির্ভরতা দিশা দেখাচ্ছেন তিনি।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের আয়োজিত নানা মেলাতেও অংশ নিয়েছেন সঞ্চিতা।প্রসঙ্গত কোনও কাপড়ের উপরে সুঁচ-সুতো দিয়ে বুননের কাজ করে ফুটিয়ে তোলা হয় নানান চিত্রকে। অতীত এবং বর্তমানের মেলবন্ধনকে ফুটিয়ে তোলা হয় কাঁথা স্টিচের মধ্য দিয়ে, আর সেই কাজ করে চলেছেন শ্যামচক এর সঞ্চিতা দে। শুধু তিনি নন, তার মা এবং এক আত্মীয় তিনজন মিলেই শুরু করেছেন এই শিল্পকর্ম। পাশাপাশি গ্রামীন এলাকার বেশ কিছু মহিলাকেও আর্থিক স্বনির্ভরতার দিশা দেখাতে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবে এই পরিস্থিতিতে গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা দিশা দেখাচ্ছেন কাঁথা শিল্পী সঞ্চিতা।
রঞ্জন চন্দ