কোচবিহার: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তবে এসবের মধ্যে বাঙালির সবচাইতে শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। তবে দুর্গাপুজোর দশমী পেরোতেই যে পূর্ণিমা তিথি আসে। সেই তিথিতে বাঙালির প্রায় প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়। সংসারের সুখ, শান্তি, ধন এবং ঐশ্বর্য প্রাপ্তির জন্য দেবী লক্ষ্মীকে আরাধনা করা হয় এদিন। এই বিশেষ দিন উপলক্ষে প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতে বিশেষ কিছু সুস্বাদু মিষ্টির পদ তৈরি করা হয়। এমনই একটি সুস্বাদু মিষ্টির পদের নাম নারকেলের রসকরা।
রান্নায় অভিজ্ঞ গৃহবধূ মাধবী চৌধুরী জানান, “দীর্ঘ সময় ধরে এই সুস্বাদু মিষ্টি পদটি তৈরি করছেন তাঁরা। প্রতিবছর কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় এই সুস্বাদু মিষ্টি পদটি লক্ষ্মীকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। সুস্বাদু এই নারকেলের মিষ্টি পদটি মূলত ওপার বাংলা থেকে এসেছে। তাইতো এর মধ্যে কিছুটা খাওয়াতেই বাঙালিয়ানার ছোঁয়া পাওয়া যায়। এই পদটি তৈরি করতে কোড়ানো নারকেল, নারকেলের জল, ক্ষীর দুধ, সামান্য চিনি এবং এলাচ গুঁড়ো প্রয়োজন। সব কিছু মিলিয়ে যখন সুস্বাদু এই মিষ্টি পদটি তৈরি হয়। যেকোনও মানুষের মন আকর্ষণ করতে পারে এই সুস্বাদু পদটি।”
তিনি আরও জানান, “প্রথমে কোড়ানো নারকেল নারকেলের জল দিয়ে ভাল করে কিছুটা মেখে নিয়ে গরমে বসিয়ে দিতে হবে। এছাড়া পরিমাণ মতন দুধ নিয়ে জাল দিয়ে বেশ কিছুটা ঘন তৈরি করতে হবে ক্ষীরের মতন। ধীরে ধীরে সেই জল কিছুটা শুকিয়ে এলে, সেই ক্ষীর দুধটি মিশিয়ে দিতে হবে তার মধ্যে। এরপর আবার কিছুক্ষণ ভাল মতো মিশিয়ে নিতে হবে। মাঝে কিছুটা স্বাদ মতো চিনি যুক্ত করতে হবে এই মিশ্রণে। তারপর গোটা মিশ্রণটি শুঁকিয়ে আসলে সেই মিশ্রণে সামান্য কিছুটা এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে দিতে হবে সুগন্ধির জন্য। তারপর একটি প্লেটে নামিয়ে কিছুটা ঠান্ডা হলে গোল গোল নাড়ুর মতো সাইজ বানাতে হবে।”
খুব সহজেই তৈরি হওয়া এই নারকেলের রসকরা ওপার বাংলার বেশিরভাগ বাড়িগুলিতে বেশ অনেকটাই জনপ্রিয়। দীর্ঘ সময় পরেও বহু বাড়িতে ওপার বাংলার সেই স্মৃতি বজায় রেখে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর জন্য এই সুস্বাদু পদটি তৈরি করা হয়। যাঁরা এখনও পর্যন্ত এই নারকেলের রসকরা খেয়েছেন সকলেই এই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।
Sarthak Pandit