হুগলি: সপরিবারে পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন ছুটি কাটাবেন বলে কিন্তু সেখানে বাঁধ সাধে ঘূর্ণিঝড় দানা! ইচ্ছা ছিল ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল দেখে বাড়ি ফিরবেন! কিন্তু তাতেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়ে যাওয়া। তারপরেই মাথায় হাত পড়ে চুঁচুড়ার ধরমপুরের কুন্ডু ও পাল পরিবারের।
অবশেষে সাইক্লোনের ভয়ে পুরী ছেড়ে বাস ধরে বাড়ি ফিরলেন চুঁচুড়ার দুই পরিবার। ঘূর্ণিঝড় দানার ল্যান্ডফল হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। মূলত ওড়িশায় এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে সব থেকে বেশি। ভ্রমণপিপাসু বাঙালি ঘোরার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা পুরীতে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বহু পর্যটক। তবে সাইক্লোনের কারণে সমুদ্র উপকূল পুরীকে পর্যটক শূন্য করতে চাইছিলেন ওড়িশা প্রশাসন। ঝড়ের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়, ট্রেন চলাচল।
আরও পড়ুন: ‘দানা’র প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র, নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টিতে আতঙ্কে গাঙ্গেয় সুন্দরবনের বাসিন্দারা
এই পরিস্থিতিতেই পুরীতে উপস্থিত ছিলেন চুঁচুড়ার দুই পরিবারের মোট ৬ জন সদস্য। তাঁরা ভেবেছিলেন পুরীতে ছুটি কাটানোর উপভোগ দ্বিগুণ করবেন ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল দেখে। তবে পারিপার্শ্বিক মানুষজন যেভাবে তাঁদের আমফানের অভিজ্ঞতা জানিয়েছিল তাতে নিজেদের ভয় আর ধরে রাখতে পারেননি ওই দুই পরিবার। আমফানে কীভাবে বালিতে ঢেকে গিয়েছিল গোটা শহর সেই গল্প শুনেছিলেন তারা। ২৮ দিন লেগে গিয়েছিল সমস্ত জায়গা থেকে বালি সরাতে এমনও ঘটনা শুনেছেন ওই পরিবারের লোকজন, তারপরেই তড়িঘড়ি ফিরেছেন নিজেদের বাড়ি চুঁচুড়ায়। ট্রেন না থাকলেও বাস ধরে বাড়ি ফিরেছেন তারা।
এই বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁরা কুড়ি তারিখে পুরী পৌঁছেছিলেন সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের জন্য। প্রথম দুদিন আবহাওয়া ঠিক থাকলেও পরের দিন থেকে সতর্কতা জারি করে ওড়িশা প্রশাসন। পরবর্তীতে হোটেলগুলি থেকে বাইরে বেরোনোর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন হোটেলে থেকেই কাটিয়ে দেবেন। হোটেল মালিকেরাও বলেছিলেন হয় হোটেলে থাকতে, না হলে বাড়ি চলে যেতে। তবে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আগের অভিজ্ঞতা শুনে নিজেদের ভয়ে ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা আর। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ওষুধ মজুদ না থাকার কারণে ট্রেন বন্ধ থাকার সত্বেও বাস ধরে কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছেন চুঁচুড়ার কুন্ডু ও পাল পরিবারের ছয়জন সদস্য।
রাহী হালদার