স্বল্প জায়গায় কম খরচে মুক্তকেশি বেগুন চাষ করে আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন প্রশান্ত বাবু 

Agriculture News: এই বেগুন চাষ করলে বছরে ১২ মাস’ই ফলন পাবেন!

দক্ষিণ দিনাজপুর: মুক্তকেশি বেগুন সহ বিভিন্ন জাতের বেগুন চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার স্বপ্নে বিভোর দক্ষিণ বালুরঘাট ব্লকের হলদিডাঙা এলাকার চাষি প্রশান্ত কুমার মণ্ডল। ভাল লাভ পাওয়ায় ক্রমশ ধান চাষ ছেড় এই জাতের বেগুন চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।

মুক্তকেশি বেগুনের প্রজাতিটি সারাবছর চাষ করলে ফলন পাওয়া যায় ব্যাপকহারে। গাছ মাঝারি আকৃতির হয়। এলাকায় গেলেই দেখা যায়, মাঠে এখন শুধুই সবুজের সমারোহ। এই বেগুন গাছ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছেয়ে আছে। নিবিড় সবুজের ভেতর উঁকি দিচ্ছে ছোট-বড় নানা আকারের বেগুন।

আর‌ও পড়ুন: গোর্খাদের সংসারী পুজোয় মেতে উঠল প্রকৃতি, বসন্তের রঙে রঙিন ডুয়ার্স

মুক্তকেশি বেগুন গাছের ডালপালা পাতলা ও ছড়ানো হয়। গাছ উচ্চতায় প্রায় ২২ ইঞ্চি লম্বা হয়। আকৃতি খাটো প্রকৃতির। প্রতিটি ডালে ৫-৬টি করে পাতা থাকে। বেগুনের ফল ডিম্বাকৃতির, বেষ্টনি বেগুনি। প্রতিটি বেগুন ৩.৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। স্বল্প খরচে অধিক লাভ এই জাতের বেগুন চাষে। চারা তৈরি করে মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। শীতকালীন, গ্রীষ্মকালীন ও বারোমাস-ই বেগুন চাষ হয় এবং ফলন পাওয়া যায়। বেগুনের মধ্যে লম্বা ফল, গোলাকার ও লম্বা- এই তিন ধরনের বেগুন পাওয়া যায়।

এই বিষয়ে বেগুন চাষি প্রশান্ত কুমার মণ্ডল জানান, প্রায় ১০-১২ বছর ধরে ১ বিঘা জমিতে চার প্রজাতির বেগুন চাষ করছেন। মুক্তকেশি, কাটালি, হাজারি, বাংলাদেশি কাটালি। বীজ বোনা থেকে প্রায় তিন চার মাস সময় লাগে পূর্ণাঙ্গ বেগুন হতে। পাইকারি ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হয় এই বেগুন।

বেগুন চাষের জন্য প্রথমে বীজতলায় চারা তৈরি করে তা মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। বীজতলা এমন স্থানে তৈরি করতে হবে যেখানে বৃষ্টির জল দাঁড়াবে না অর্থাৎ সুনিষ্কাশিত হতে হবে। সর্বদা আলো বাতাস
পায় যেন, অর্থাৎ ছায়ামুক্ত হতে হবে। সাধারণত মাঠের জমি তৈরির জন্য ৪-৫ বার চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। ৩৫-৪৫ দিন বয়সের চারা রোপণের উপযোগী হয়। এ সময় চারাতে ৫-৬টি পাতা গজায় এবং চারা প্রায় ১৫ সেমি লম্বা হয়।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

প্রয়োজনে দু’মাস পর্যন্ত চারা বীজতলার রেখে দেওয়া যায়। চারা তোলার সময় যাতে শিকড় নষ্ট না হয় সেজন্য চারা তোলার ১-২ ঘণ্টা আগে বীজতলায় জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে নিতে হবে। চারা রোপণ মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন মরশুমের উপর নির্ভর করে। জমিতে চারা লাগানোর পর পরই যাতে চারা শুকিয়ে না যায় সে জন্য সম্ভব হলে বিকালের দিকে চারা লাগানো উচিৎ। বেগুন চাষ করতে যে ধরনের মাটির প্রয়োজন সেই মাটি তৈরি করতে অনেকটাই খাটনির পাশাপাশি খরচও রয়েছে। এর ফলে বেগুন চাষ করে কতটা লাভের মুখ দেখবে, চলতি বছরে বেগুন চাষিরা সেটাই দেখার বিষয়।

সুস্মিতা গোস্বামী