বীরভূম: অনুব্রত মণ্ডল মঙ্গলবার সকাল ন’টা নাগাদ ফিরেছেন বীরভূমের বাড়িতে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১১ অগাস্ট গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর বোলপুর নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতার করার পর তাঁকে প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগার এবং সেখান থেকে পাঠানো হয় দিল্লির তিহার জেলে।
দীর্ঘ প্রায় দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুব্রত মণ্ডল তিহারের মধ্যে জেল বন্দি ছিলেন। সময় গড়িয়েছে প্রায় দু’বছর। বদলেছে অনেক কিছু তবে বদলায়নি শুধু একটা জিনিস। মুখ্যমন্ত্রীর অনুব্রতর প্রতি আস্থা। তবে বীরভূমের সেই ‘বাঘ’ অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ছিলেন জেলার বাইরে। অনুব্রতর কাছের শুভাকাঙ্ক্ষীরা দর্শন পায়নি তাঁর।
আরও পড়ুন: গোটা পৃথিবীর সেরা স্কুলের তালিকায় ভারতের কোন স্কুল? নাম জানলে গর্বে বুক ভরে উঠবে! কুর্নিশ
তাই অনুব্রত মণ্ডল যেহেতু বাড়ি ফিরছেন সেই খবর জানতেই সকাল থেকে হাজার হাজার তাঁর কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে ভক্তদের ভিড় বোলপুর নিচুপট্টি এলাকায়। সকলের একটাই ইচ্ছে একবার দর্শন হোক তাঁদের প্রিয় নেতার। নিচুপট্টি এলাকায় এমন ভিড় হয়েছিল যাতে পা রাখার জায়গা তো দূরের কথা পায়ের উপর পা রাখারও জায়গা ছিল না। আর স্বভাবতই এই পরিমাণ ভিড় হলে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা তো ঘটবেই।বোলপুরেও যদিও তার অন্যথা হয়নি।
কাতারে কাতারে ভিড়ে কারও হারিয়ে গিয়েছে কানে থাকা হেডফোন, আবার ভিড়ের ধাক্কায় দুই-একজনের মোবাইল হাত থেকে পড়ে একদম সর্বনাশ। অন্যদিকে, এক মহিলার ইচ্ছে তিনি দেখা করবেনই অনুব্রতর সঙ্গে। তাই কেউ যেন তাঁর পথ না আটকায়, সেই কারণে দুই হাতে সবুজ আবীর নিয়ে হাজির তিনি। সবাইকে চিৎকার করে বলছেন কেউ পথ আটকালে তাঁর মাথায় এই আবীর ঢেলে দেবেন।
আরও পড়ুন: চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে কী হবে জানেন? শরীরের এই পরিবর্তনগুলো শুনলে চমকাবেন! জানুন ডাক্তারের কথা
তবে এই সবের মাঝে এক অন্য মজার ঘটনা ঘটলও খোদ অনুব্রত মণ্ডলের আত্মীয়র সঙ্গেই। শ্যালক আনন্দ গোপাল ঘোষ দেখা করতে ছুটে গিয়েছিলেন জামাইবাবু অনুব্রতর সঙ্গে। আর ছুটতে গিয়েই বিপত্তি। প্রায় দু’হাজার টাকা দিয়ে বানানো তাঁর নতুন চশমা ভেঙেচুড়ে একাকার। ভিড়ের মাঝে হাজার চেষ্টাতেও চশমার একটি কাচের অবশিষ্ট পর্যন্ত খুঁজে পেলেন না তিনি।
তবে দূর থেকে জামাইবাবু দেখেছেন সবটা! জামাইবাবু কেষ্টও হালকা ছলে জবাব দিলেন থামো আর খুঁজতে হবে না। দু’বছর পর আমি ফিরেছি তার জন্য ২০০০ টাকার চশমাই তো গিয়েছে, তাতে ক্ষতি কী? আর জামাইবাবুর মুখে সেই কথা শুনেই দু’জনের ঠোঁটেই যেন হালকা হাসি! অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীদের ঠেলাঠেলিতে শ্যালকের চশমাই ভেঙে যায়। বাড়ির ভিতরে গিয়ে জামাইবাবু এবং ভাগ্নিকে দেখে খুশিতে আপ্লুত হন আনন্দ। আর তখন রসিকতার সুযোগটুকু হাতছাড়া করতে চাননি আনন্দ।
অনুব্রতকে গিয়ে বলে উঠলেন, “তোমাকে দেখতে এসে আমার দু’হাজার টাকার চশমা চলে গেল। বাড়ি ফিরেছ, তোমার জন্য আমি মিষ্টি এনেছি, তার পরিবর্তে তুমি আমাকে একটা চশমা গড়িয়ে দেবে।” তবে অনুব্রত মণ্ডলও ছাড়ার লোক নয়, তিনি তৎক্ষণাৎ জবাব দেন, ‘আমি ফিরেছি, আমার উপার্জন থেকে তোমাকে পাঁচ হাজার টাকার চশমা গড়িয়ে দেব।’ শ্যালক এবং জামাইবাবুর এই খুনসুটি দেখে অনেকটাই খুশি হয়েছে কেষ্টর পরিবার।
সৌভিক রায়