পিংলার দুই পড়ুয়া

Bangladesh: কী ঘটছিল বাংলাদেশ? বাড়ি ফিরে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শোনালেন এপার বাংলার পড়ুয়া

পশ্চিম মেদিনীপুর: শুনতে পাওয়া যাচ্ছে গুলির শব্দ। চলছে হৈ-হট্টগোল। রাস্তায় পড়ে রয়েছে ভাঙা, উল্টানো গাড়ি, ইট-পাটকেল। বাংলাদেশ থেকে ফিরে এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন এক পড়ুয়া। পিংলার প্রত্যন্ত গ্রাম মলিগ্রাম থেকে বাংলাদেশ ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন দুই জন পড়ুয়া। তবে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে এসেছেন নিজেদের জন্মভূমিতে। এখনও তাদের মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কারও চলছিল পরীক্ষা, কারও আবার সামনে রয়েছে ফাইনাল ইয়ার। চাইছেন ফিরতে। তবে গুলির শব্দ, ইট পাটকেল পড়ে থাকার ছবি চোখের সামনে ভাসছে। বাংলাদেশ থেকে ফিরে দুরুদুরু বুকে জানালেন অভিজ্ঞতার কথা। এখনও বাবা-মায়ের চোখে আতঙ্ক। আদৌ কি ফিরতে পারবে কলেজে? ডাক্তারি পড়া কি সম্পূর্ণ হবে তাদের, সে প্রশ্নই সকলের।

বাংলাদেশে চলেছিল কোটা বিরোধী আন্দোলন। শামিল হয়েছিল হাজার হাজার পড়ুয়া। রাজপথে মুখোমুখি পুলিশ এবং ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে প্রথম দিন থেকেই হোস্টেলে বন্দি ছিল এ পারের পড়ুয়ারা। পরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্কুল কলেজ বন্ধের নির্দেশ জারি করা হয়। তখন পরিবারের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কথা হত। কিন্তু তারপর বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। আতঙ্ক বাড়ে পরিবারের। অবশেষে নিজেদের উদ্যোগে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাড়ি ফেরে দুজন পড়ুয়া।

আরও পড়ুন: হুগলিতে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে আসছে এ কী জিনিস! দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের

পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার মলিগ্রাম অঞ্চলের পেশায় চিকিৎসক মৃগাঙ্ক মাইতির ছেলে ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র দেবজিৎ মাইতি। করোনার আগে তিনি গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। ঢাকা শহরের একটি কলেজে পড়াশোনা করত সে। তবে বাংলাদেশে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার পর পরিবারের সঙ্গে বারংবার যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু কয়েকদিন যোগাযোগের পর হঠাৎই যোগাযোগ হয়ে ওঠে না, ভয় বাড়ছিল পরিবারের। অবশেষে দূতাবাসের সহযোগিতায় বাড়ি ফিরে দেবজিৎ। দেবজিৎ এর বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বাড়ি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সৈরিশ পন্ডিতের। বাবা একজন শিক্ষক। সম্প্রতি ঈদের সময় বাড়ি এসেছিল সে। তবে পড়াশোনার জন্যও ফিরে যায় কলেজে।

কিছুদিন চলছিল ক্লাস। হঠাৎই শুরু হয় আন্দোলন। কলেজ থেকে নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয় হোস্টেলে থাকার জন্য। নিজেদের পাশাপাশি চাপ বাড়ছিল বাড়ির লোকজনের। অবশেষে নিজেদের উদ্যোগে কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বাড়ি ফেরে সে। রাতের শুনশান রাস্তা দিয়ে আসার সময় দেখতে পায় এদিক ওদিক পড়ে রয়েছে আন্দোলনের নানা ছবি।

—– রঞ্জন চন্দ