মন্দির 

বিদেশ থেকে ভক্তরা ছুটে আসছেন মায়ের কাছে! বর্ধমানের এই মন্দিরে কী এমন ঘটছে? জানুন

পূর্ব বর্ধমান: সতীপীঠের কথা কম বেশি আমরা সকলেই জানি।  দেশ-বিদেশের নানান জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সতী পীঠ গুলি। সতীর ৫১ পীঠের মধ্যে অন্যতম একটি সতীপীঠ হল উজানি। পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের কোগ্রামে অবস্থিত এই সতীপীঠ । দৈনিক দূরদূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থীরা আসেন এই সতীপীঠ দর্শন করতে । এখানে দেবীর নাম মঙ্গলচন্ডী হলেও দেবীর রূপ হচ্ছে দুর্গা, দশভূজা । কষ্টি পাথরের মায়ের মূর্তি তৈরি করা ।

এই মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরে মায়ের সেবা করে আসছেন রায় পরিবার এই প্রসঙ্গে বর্তমানে মন্দিরের দায়িত্বে থাকা সোমনাথ রায় জানান, “এটা ৫১ সতিপীঠের একটা পীঠ। সতিপীঠ আজকের নয়, অনেক পুরানো। কামাখ্যা যতটা পুরানো,এটাও ঠিক ততটাই। সতিপীঠ সব একই সময়ের। কোনও টা প্রচার পায়, কোনওটা পায় না। এখানে প্রতিদিনই মায়ের নিত্যসেবা হয়, মায়ের অন্ন ভোগ হয়। এছাড়া দুর্গা পুজোর সময় মায়ের বাৎসরিক অনুষ্ঠান তিন দিন ধরে। কালীপুজোতে বিশেষ করে মায়ের একদিনের জন্য উৎসব আছে। মায়ের নবান্ন উৎসব আছে। পয়লা মাঘ উজানী মেলা।

আরও পড়ুন: কচুর শাক ভিটামিনের খনি! বহু রোগে মুক্তি দেয়! এই নিয়ম কাটলে চুলকাবে না হাতও

মন্দিরের পিছনে অজয় নদ আছে।সেই অজয় নদের বালিতে একদিনের মেলা বসে। মঙ্গলচণ্ডী, জয়মঙ্গল বার এগুলো তো আছেই।আমাদের বারো মাস যে অন্ন ভোগ হয়, সেই ভোগে দেবীকে মাছ দিতে হয়। মাছ ছাড়া দেবীর অন্ন ভোগ হয় না। দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন এক দিনের জন্য দেবীকে নিরামিষ খাওয়ানো হয়। তাছাড়া বারো মাস মাছের ভোগ দেওয়া হয়।

এখানে নদীর পাড়ে জঙ্গল ছিল। জঙ্গল কেটে মায়ের মন্দির তৈরি করা হয়েছে। তখন রাজারাই মন্দির তৈরি করেছে। আমরা বংশ পরম্পরায় মায়ের পুজো করে আসছি। আমি ২২ নম্বর পুরোহিত।২১ নম্বর মায়ের পুজো করতে করতেই গত হয়েছেন।এই যে মন্দির তা ভক্তদের অনুদানেই গড়ে উঠেছে। তবে মেন রোড থেকে মন্দির আসার যে রাস্তা সেটা অনেক খারাপ। এটা বাড়ির কোনও মন্দির নয়। এটা তো সতীপীঠ। ৫১ পীঠের একটা পীঠ।আমরা চাই রাস্তাটা সুন্দর হোক।আমেরিকা থেকে, ইংল্যান্ড থেকে, নিউজিল্যান্ড, কানাডা থেকে লোক অনেক আসে। দিল্লী থেকে আসে। কলকাতাবাসী লোকেরাও আসে প্রায়।”

আরও পড়ুন: গরমে তেঁতুলের টক খাচ্ছেন, ডালে দিচ্ছেন? ক্ষতি হচ্ছে না উপকার!

মন্দিরের বর্তমান পুরোহিতের কথায়, এই মন্দির, অন্যান্য পীঠ গুলির মত প্রচর পায়নি। তাই অনান্য পীঠ গুলির তুলনায় এখানে ভিড় কিছুটা কম। মঙ্গলকোটের কোগ্রামে অবস্থিত এই সতীপীঠে আপনি চাইলে ঘুরেও আসতে পারেন । একদম অজয় নদের ধারে অবস্থিত এই মনোরম পরিবেশের জায়গা দেখে মুগ্ধ হবেন আপনিও। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই । মন্দির প্রাঙ্গণেই রয়েছে থাকা এবং অন্নভোগ গ্রহণের ব্যবস্থা। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের কথা মাথায় রেখে করা হয়েছে এই ব্যবস্থা।

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ভোগের জন্য ফোন করে অথবা সকাল সকাল এসে মন্দির কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে । রাত্রি যাপনের জন্য আপনাকে দিতে হবে ৬০০ টাকা এবং ভোগের জন্য এক একজনের লাগবে ১০০ টাকা । ফোন করে ভোগ বুকিং করলে ৫০/১০০ জনেরও ভোগ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। ভোগ প্রসাদ এবং থাকার জন্য ফোন করতে হবে– ৮৩৪৮৯৬৮২৪৪ এই নাম্বারে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী