পূর্ব বর্ধমান: ছাত্র হিসেবে এই বিদ্যালয়ে ভরতি হয়েছিলেন স্বয়ং বিদ্রোহী কবি। এছাড়াও জড়িয়ে রয়েছে আরও এক কবির নাম। সেই সবের স্মৃতি আঁকড়ে আজও দাড়িয়ে আছে মঙ্গলকোটের এই বিদ্যালয়টি। অবিভক্ত বর্ধমান জেলার সঙ্গে নিবিড় যোগ রয়েছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের।
গোটা জেলাটি প্রশাসনিক কারণে দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর, দুই বর্ধমান জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কবির একাধিক স্মৃতি। তেমনই এক স্মৃতি জড়িয়ে আছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকটের সঙ্গেও। পূর্ব বর্ধমান জেলার এই মঙ্গলকোটে রয়েছে এমন একটি বিদ্যালয়, যেখানে বেশ কিছুদিন পড়াশোনা করেছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ভারত জেতার আনন্দে গঙ্গায় স্নান, জল থেকে আর উঠলই না সৌরভ!
পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এই বিদ্যালয়টির নাম মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যায়তন। বিদ্রোহী কবির সেই স্মৃতি আকড়ে আজও দাড়িয়ে রয়েছে এই বিদ্যালয়। এই প্রসঙ্গে এই বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক পরিমল প্রধান বলেন, “কুমুদরঞ্জন মল্লিকের খুবই অনুগত বাধ্য ছাত্র ছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ১৯১১ – ১৯১২ সাল সময়কালে খুবই সুনামের সঙ্গে এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। এই বিষয়টি খুবই ঐতিহ্যপূর্ণ।”
তবে কেবল বিদ্রোহী কবি নয়, মঙ্গলকোটের এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরেক বিখ্যাত কবির নাম। তিনি কুমুদরঞ্জন মল্লিক। জানা যায়, ১৯০৭ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। আর তিনি প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন এই বিদ্যালয়ে ভরতিহন কাজী নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ত্বকে আচমকা বলিরেখা? আপনার এই অভ্যেসগুলি থাকলে সাবধান! পরামর্শ বিশেষজ্ঞের
প্রসঙ্গত, এই মাথরুন থেকে কিছুটা দূরেই অবস্থিত কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের বসত বাড়ি। মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যায়তনের এর প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন দেশ-বিদেশ থেকে বহু গবেষক, কবি, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক বিভিন্ন সময়ে এই বিদ্যালয়ে আসেন। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক পরিমল প্রধান আরও জানান, “আমি এই বিদ্যালয়ে আসার পর, দেশ-বিদেশ থেকেও বহু কবি, লেখক , সাহিত্যিককে বিদ্যালয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে আসতে দেখেছি। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমিও গর্ব বোধ করি।”
পল্লী কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি এই বিদ্যালয়কে অলংকৃত করেছে বলে মত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের। এই দুই মনীষীর বিশেষ দিন এই বিদ্যালয়ে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে এবং সাড়ম্বরে পালিত হয় বলেও জানা গিয়েছে। আর এভাবেই পল্লী কবি ও বিদ্রোহী কবির স্মৃতি আঁকড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মঙ্গলকোটের শতাব্দী প্রাচীন এই বিদ্যালয়টি।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী