পাসপোর্ট

Birbhum News: পাসপোর্ট বানাবেন? সতর্ক নন, না হলেই ভয়ঙ্কর বিপদ, পড়বেন বিরাট ফাঁদে

বীরভূম: নিজের দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে ঘুরতে কিংবা কাজের জন্য যেতে চাইছেন? সে ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অথবা ভিসার প্রয়োজন পড়বেই। সরকারি বেশ কয়েকটি নিয়ম পালন করার পরেই আপনি হাতে পাসপোর্ট পেতে পারেন। কিন্তু সমস্যা ঠিক সেই জায়গায়। পাসপোর্ট বানাতে গেলে আপনাকে হতে হবে বাড়তি সতর্ক।

ঘটনাটি বীরভূমের। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সই ও সিল জাল করে এফিডেভিট। এরপর সেই নথি দিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন। যদিও আইনজীবী মারফত ঘটনাটি নজরে আসতেই বৃহস্পতিবার দুই ল-ক্লার্ককে গ্রেফতার করল রামপুরহাট থানার পুলিশ। এই ঘটনায় প্রশাসনিক মহলে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযুক্ত দুই ল-ক্লার্কের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করেন রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডে।তিনি বলেন, ওই দুই অভিযুক্ত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সই ও সিল জাল করে এফিডেভিট করায়। ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাসপোর্ট করার সময় এফিডেভিটের মাধ্যমে স্ব-স্বীকারোক্তি দিতে হয় যে, তাঁর নামে কোনও থানায় কোনও মামলা নেই।সেই মত এক ব্যক্তি এফিডেভিট করার জন্য আবেদন করতে মাড়গ্রামের চাঁদপাড়ার বাসিন্দার শরণাপন্ন হন। এফিডেভিট হয়ে প্রশাসনিক স্তরে জমাও পড়ে যায়। সম্প্রতি সেই এফিডেভিট যাচাই করতে আদালতে আসেন এক ডিআইবি অফিসার। বিষয়টি নজরে আসে রামপুরহাট আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উৎপল মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ” গত বছরের ১০ মে এফিডেভিট করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এফিডেভিট করা বন্ধ ছিল। সন্দেহ জন্মায় ঠিক সেই জায়গায়। সন্দেহ জোরাল হতেই বিষয়টিতে নজর দেওয়া হয়। দেখা যায়, সই জাল করা হয়েছে। পাশাপাশি যাঁর নামে এফিডেভিট, তিনি মুম্বইয়ে থাকেন। অথচ তাঁর নামে এফিডেভিট হয়ে গেল। এটা বড় জালিয়াতি।এরপরই বিষয়টি মহকুমা শাসককে লিখিতভাবে জানাই।”

ওই এফিডেভিটে সই রয়েছে ডেপুটি ম্যাজিস্টেট তথা ডেপুটি কালেকক্টর নাজিম আলি মুফতির। সেই সই ও তাঁর অফিসিয়াল স্ট্যাম্পও জাল করা হয়েছে। মুফতি সাহেব বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর যিনি এফিডেভিট করেছিলেন, তাঁকে মহকুমা শাসকের উপস্থিতিতে ডাকা হয়। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন,”ল-ক্লার্ক-এর কাছে করেছি”। সেই ল-ক্লার্ককে ডাকা হলে তিনি বলেন,” আমি ও অন্য একজন ল’ক্লার্ক মাড়গ্রামের বাসিন্দার কাছে করিয়েছি।” কিন্তু দ্বিতীয় ল-ক্লার্ককে ডাকা হলে তিনি আসতে চাননি।এমনকী এসডিওর নাম করে ডাকা হলেও আসতে অস্বীকার করেন।তিনদিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলার পর মুফতি সাহেব দুই ল-ক্লার্ককে নিয়ে আসার জন্য মাড়গ্রাম থানাকে চিঠি দেন। সেই মত,শুক্রবার অভিযুক্ত  দু’জনকে তুলে এনে রামপুরহাট থানায় পৌঁছে দেন মাড়গ্রাম থানার পুলিশ। মুফতি সাহেব বলেন, ” ওরা একেবারে পার্সোনাল অফিস খুলে বসেছিল। স্ট্যাম্প পেপারে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের জাল সই, সিল দিয়ে এফিডেভিট করে দিচ্ছিল।অভিযুক্ত দু’জনেই ল’ক্লার্ক বলে নিজেদের দাবি করেছেন।”

যদিও বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি বলেন, ” একজনকে ল-ক্লার্ক বলে শুনেছি। ও জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে। দ্বিতীয় জনকে চিনি না। এর আগেও এক আইনজীবীর সই জাল করে এফিডেভিট করা হয়েছিল।তৎকালীন এসডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে প্রায় দু’মাস জেল খাটতে হয়েছিল। এই ধরণের অনৈতিক কাজের প্রতি আমাদের নজর রয়েছে। তারজন্যই  বিষয়টি ধরা পড়ল।”

সৌভিক রায়