নদিয়া: গাঁয়ের ছেলের মৃত্যু হয়েছে অন্ধকার রাস্তায় সাপে কামড়ে, সুদূর হায়দরাবাদ থেকে এসে ছোট থেকে বড় হওয়া গ্রামের পথ আলোকিত করলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। নদিয়ার শান্তিপুর হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মুসলিম পাড়া গ্রামের রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা না থাকার জন্য সম্প্রতি গত ২০ অগাস্ট সাপে কামড়ের মৃত্যু হয়েছে এলাকারই জহিরুল বিশ্বাস নামে নবম শ্রেণীর ছাত্রের। কর্মসূত্রে সুদূর হায়দরাবাদ থাকলেও গ্রামের অন্ধকার দূর করতে ছুটে এসেছেন এক সময় গ্রামেই না খেতে পেয়ে বড় হওয়া এবং বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত হায়দরাবাদের সোনার গয়না তৈরির কারখানার সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কাওসার আলি।
শুধু এই কারণেই তা নয় গ্রামের মানুষের অভাব দারিদ্র্য থাকায় প্রান্তিক মানুষদের নিয়মিত মধ্যাহ্নভোজ এবং শুক্রবার বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণের ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ২০২১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নিজের কেনা জমির উপরে গড়ে তুলেছিলেন একটি সংস্থা। সংস্থার বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৭ জন, প্রত্যেকেই নিজেদের কাজের ফাঁকে প্রতিদিন নিয়মিত পরিশ্রম করে থাকেন এই দুই পরিষেবার বিষয়ে। তবে সকলে সামান্য সহযোগিতা করলেও বেশিরভাগ অংশই দিয়ে থাকেন কাওসার আলি।
প্রতিষ্ঠা দিবসের সূচনা লগ্নে লাগানো হয়েছে ৫০ টি ইলেকট্রিক্যাল পোল লাইট। সেই আলোকে আলোকিত হয়ে একদিকে যেমন অপরাধ প্রবণতা কমবে অন্যদিকে জহিরুলের মতন কারোর প্রাণ যাবে না। এ বিষয়ে কাওসার বলেন, প্রতিটি লাইট সুইচ তার সরঞ্জাম সহ প্রায় ১৫০০ টাকা করে খরচ পড়েছে। তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ইলেকট্রিক অফিসের অনুমতি নেওয়া হয়েছে অন্যদিকে স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ইলেকট্রিক বিলের খরচ দেওয়ার সহযোগিতা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হরিপুর পঞ্চায়েত প্রধান বীরেন মাহাতো, তিনি বলেন মানুষ এবং পঞ্চায়েত একে অন্যের পরিপূরক। সকলে মিলে এভাবে সঙ্ঘবদ্ধভাবে উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নিলে পঞ্চায়েত সর্বদা পাশে থাকবে। সংস্থার প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন প্রান্তিক মানুষজন মধ্যাহ্নভোজ পান এখানে, বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ঔষধ পান, সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি এ ধরনের বেসরকারি উদ্যোগ থাকলে সকলেই ভালথাকবেন। এলাকার প্রবীণ মানুষরা বাহবা দিয়ে বলেন, কাওসার এই গ্রামেরই ছেলে, অনেকেরই অর্থ আছে কিন্তু অন্য রাজ্যে থেকেও গ্রামের প্রতি এবং এলাকার মানুষজনের প্রতি সহানুভূতি এতোটুকু কমেনি।
Mainak Debnath