প্রতিকী ছবি

Digital Arrest Fraud: এক ফোনেই সর্বস্বান্ত! ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর খপ্পরে পড়লে শেষ, সাবধান হবেন কীভাবে

মুর্শিদাবাদ: বর্তমানে স্মার্টফোন আর ইন্টারনেটের যুগে সবাই এখন অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। আর এই মুহুর্তে সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধমান বিশ্বে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ নামে পরিচিত অপরাধের একটি নতুন কৌশল আবির্ভূত হয়েছে। ভাবছেন ডিজিটাল গ্রেফতার আবার কী জিনিস? আর এই ডিজিটাল গ্রেফতারের ফাঁদে এখন অনেকে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ব্যাঙ্কের গচ্ছিত টাকা উধাও হয়েছে নিমেষেই মধ্যবিত্তের পকেট থেকেই।

‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর নাম ব্যবহার করে প্রতারকরা  কারসাজি করার জন্য পুলিশ, মাদকবিরোধী বা কাস্টমস কর্মকর্তাদের ছদ্মবেশে আর সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে থাকেন অতি সহজেই।

সাইবার বিশেষজ্ঞ শিবম চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, সাইবার-অপরাধীরা তাদের খেলাকে বাড়িয়ে তুলছে এবং লোকেদের প্রতারণা করার পদ্ধতিতে আরও   প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত হচ্ছে। তাদের সর্বশেষ পদ্ধতিতে তারা ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ বা অপহরণ এবং অথবা তাদের ভিকটিমের সন্তানদের, বিশেষ করে যারা বিদেশে অধ্যয়নরত তাদের গ্রেফতারের হুমকি দেওয়ার মতো  কৌশল ব্যবহার করে অর্থ আদায় করছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞ জানান, বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে, অনলাইন জালিয়াতিতে যুক্ত অপরাধীরা তাদের শিকারদের ফোন করেছে। ফোনে জানিয়েছে- কোনও পণ্য, ওষুধ, পাসপোর্ট বা কোনও জিনিস পাঠিয়েছে। তার জন্য ওই ব্যক্তিদের কাছে ওটিপি গিয়েছে। তার ভিত্তিতে সেই ওটিপি তাদের ফোনে জানাতে হবে বলেও সাধারণত হুমকি দিয়ে থাকে অপরাধীরা। কিছু ক্ষেত্রে আবার, অপরাধীরা যে ব্যক্তিদের শিকার হিসেবে বেছে নেয়, তাদের আত্মীয় বা বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। তাদের বলে যে ওই ব্যক্তি এক বড় সমস্যা বা দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে। কখনও কখনও, তারা এও জানায় যে ভুক্তভোগীদের একজনের কাছের বা প্রিয়জনকে অপরাধ বা দুর্ঘটনায় জড়িত পাওয়া গিয়েছে এবং তাদের হেফাজতে রয়েছে। ‘মামলা’ আপস করার জন্য টাকা দাবি করা হয়। অবিলম্বে অনলাইনে অর্থ দিতে হবে। আর, এভাবেই সাইবার অপরাধীরা শিকার বা তার আত্মীয়দের থেকে অর্থ হাতিয়ে নয়।

আরও পড়ুন: ফেলে দেওয়া প্যারাসিটামল দিয়ে অবিশ্বাস্য কাজ করলেন বীরভূমের যুবক, আন্তর্জাতিক পুরস্কার এল ঝুলিতে

আরও পড়ুন: ১৫ মিনিটে তাক লাগিয়ে দিল ছোট্ট মেয়ে! বিশ্বের দরবারে নামোজ্জ্বল জঙ্গলমহলের সংস্থিতার, গর্বিত জেলাবাসী

অপরাধীরা নিজেদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করতে হামেশাই পুলিশ কর্মীদের ছবি বা পরিচয় ব্যবহার করে। মামলায় ‘সমঝোতা’ করা বা মামলা বন্ধ করার জন্য নামে শিকারের থেকে অর্থ দাবি করে। কিছু ক্ষেত্রে, শিকার বা ভুক্তভোগীদের ‘ডিজিটালি গ্রেফতার’ করা হয়। দাবি পূরণ না-হওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের স্কাইপে বা অন্যান্য ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মে অপরাধীদের কাছে দৃশ্যমান থাকতে বাধ্য করা হয়। সাইবার অপরাধীরা এক্ষেত্রে থানা বা সরকারি অফিসের মতো দেখতে স্টুডিও ব্যবহার করে। আর পুলিশের মতো ইউনিফর্ম পরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকে। ডিজিটাল গ্রেফতার এখন সাইবার জগতের নতুন ফাঁদ। আর এই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন।

যাঁরা এই ধরনের কল পেয়েছেন, বা যদি কেও এই ধরনের কল পাবেন তাঁদের অবিলম্বে সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন ১৯৩০ বা স্থানীয় পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানাতে হবে।

কৌশিক অধিকারী