রঘুনাথগঞ্জে তৈরি হচ্ছে সিল্ক

Murshidabad Silk: জরির ঝুমকোলতা আঁচল জুড়ে বিছিয়ে, মুর্শিদাবাদ সিল্কের দাম কত টাকা থেকে শুরু? জানুন

কৌশিক অধিকারী, মুর্শিদাবাদ: সামনেই দুর্গাপুজো। আর হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। আর তার আগে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে তৈরি চলছে দিন রাত এক করে মুর্শিদাবাদ সিল্ক শাড়ি তৈরির কাজ। মেশিনে তৈরি করা হচ্ছে এই শাড়ি। মুর্শিদাবাদ সিল্কের খ্যাতি ভুবনময়, জগৎজোড়া। মুর্শিদাবাদের মির্জাপুরে তৈরি করা হয় এই সিল্ক শাড়ি। জানা যায়, মুর্শিদকুলি খাঁয়ের হাত ধরে ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে প্রবেশ করে বালুচরী। সে সময় রংবেরং সুতোর বুননে বালুচরীর মসৃণ আঁচলে ফুটিয়ে তোলা হত নবাবি জীবনযাত্রা।

অচিরেই এই শিল্প দিল্লির মোঘল শাসকদের হৃদয় হরণ করে। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাটদের সর্বাঙ্গীন পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন অবিভক্ত বাংলায় রেশমশিল্প ব্যাপক উন্নত হয়। রেশম শাড়ি তৈরির কারখানা ইতিহাসের সিল্ক যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়। বেঙ্গল সিল্ক বলতে মূলত বাংলাদেশের রাজশাহী, এই রাজ্যের মালদা ও মুর্শিদাবাদের সিল্ককেই বোঝানো হত সে কালে। কথিত আছে, রেশমচাষের পদ্ধতি, সিল্কের কার্যক্রম ও ব্যবসায় হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য টিপু সুলতান সুদূর মহীশুর থেকে শিক্ষানবিশ হিসেবে স্থানীয় তাঁতিদের পাঠিয়েছিলেন অবিভক্ত বাংলায়। তবে বর্তমানে সময় পাল্টেছে। এখন মেশিনের সাহায্য তৈরি করা হয় এই মুর্শিদাবাদ সিল্ক শাড়ি। পুজোর আগে নাওয়া খাওয়া ভুলে দিন রাত এক করে চলছে শাড়ি তৈরির কাজ।

আরও পড়ুন : ২০০ হাতি হত্যা করে দেশবাসীর খাবার যোগাড় করবে খরা ও খাদ্যসঙ্কটে বিপর্যস্ত এই দেশ

মুর্শিদাবাদে প্রায় ২০০ বছর ধরে এই সিল্কের শাড়ি তৈরি হয়ে আসছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময় থেকে এই শাড়ি বানানো শুরু হয়। ইংল্যান্ডে এক সময় এই শাড়ির ব্যপক চাহিদা ছিল। মুর্শিদাবাদে মির্জাপুর সিল্কের উপরে সীতাহরণ, জটায়ু বধ, শকুন্তলা-সহ নানা আখ্যানের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হত। এখন তাতে লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সাদা সিল্কের সুতোকে বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে তা দিয়েই তৈরি হচ্ছে রঙিন শাড়ি। ময়ূরকণ্ঠী নীল জমিন আর সোনালি পাড়। কিংবা রানি রঙের ঢালে কালোর ছোঁয়া। আর তার আঁচল বেয়ে নেমে এসেছে রঙিন ঝুমকো। কটনের মাঝেই সিল্কের সুতোর বুনোট। কোনওটায় আবার রেশমি সুতোর মাঝে সোনালি জরির ফুল। আঁচল বেয়ে ঢালাও সোনালি জরির কাজ। কিংবা অফ হোয়াইট শাড়িতে লাল-নীল-হলুদের বুটি আর আঁচলের ধার ঘেষে লতিয়ে উঠেছে ফুলের নকশা।