ধান কাটা চলছে মাঠে 

East Bardhaman News: পুড়ছে গোটা বাংলা, তীব্র গরমে হাঁসফাঁস, চরম ভোগান্তি সকলের, তবুও চাষিদের কোনও কষ্ট হচ্ছে না! কারণটা কী?

পূর্ব বর্ধমান: তীব্র গরমে কার্যত নাজেহাল অবস্থা রাজ্যবাসীর। কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন সকলেই। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কার্যত উল্টো সুর, এক শ্রেণীর মানুষের মুখে। কিন্তু ঠিক কি কারণে এমন প্রত্যাশা তাদের? কারণ জানলে অবাক হবেন আপনিও।

বিগত বেশ কয়েকদিন যাবত গোটা রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র গরম ও মারাত্মক তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মের দহন জ্বালায় কার্যত পুড়ছে গোটা বাংলা। এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই চাইছে গোটা বাংলার মানুষ। আট থেকে আশি, সকলেই তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে। চাতক পাখির মতো বৃষ্টির আশায় চেয়ে রয়েছে সবাই। কিন্তু এহেন অবস্থাতে কার্যত উল্টো সুর এক শ্রেণীর মানুষের মুখে। স্বস্তির বৃষ্টি নয়, তারা চাইছেন আরও কিছুদিন বজায় থাকুক এই আবহাওয়া।

আরও পড়ুন-    শৈশবে চরম কষ্ট, বাবা দেননি মেয়ের মর্যাদা, পড়াশোনা ছেড়ে চলচ্চিত্রে এসেই বলিউডের এভারগ্রীন তিনি, বলুন তো মায়ের কোলে ‘এই’ শিশুটি কে?

তীব্র এই রোদ গরম স্থায়ী হোক আরও কিছুদিন। আর তাতেই নাকি হাসি ফুটবে তাদের মুখে। কিন্তু কেনই বা এমন ভিন্ন কথা তাদের মুখে ? কারাই বা চাইছেন এই কাঠফাটা রোদ? আসলে যারা এই তীব্র রোদ গরম চাইছেন তারা রাজ্যের শস্য ভান্ডারের অর্থাৎ পূর্ব বর্ধমান জেলার বোরো ধান চাষি। কিন্তু কেন এমন চাইছেন তারা? আসলে কৃষকদের তরফে জানানো হয়েছে, এখন সব মাত্র বোরো ধান পেকে, তাতে সোনালি রঙ ধরা শুরু হয়েছে। সেই ধান কেটে, ঝেড়ে ঘরে তোলা এখনও বাকি। আর তাই এমন ভিন্ন ধর্মী চাওয়া তাদের। এই প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলার বোরো ধান চাষ চাষিরা বলেন, “রোদে গরমে থাকতে পারা যাচ্ছেনা, কিন্তু এরকম রোদ থাকা ভাল। কারণ মাঠে ধান আছে সেগুলো তুলতে সুবিধা হবে। এরকম রোদ আরও দিন দশেক থাকলে আরও বেশি ভাল হয়। আমরা চাষি লোক , এই রোদ থাকলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।”

গোটা রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য জেলাগুলির মধ্যে পূর্ব বর্ধমান অন্যতম। রাজ্যে এর পরিচিতি শস্যভান্ডার হিসেবে। ধান হল পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রধান অর্থকারী ফসল। বিভিন্ন উন্নত ও সুগন্ধি প্রজাতির ধান চাষে এই জেলার সুনাম রয়েছে সর্বত্রই। জেলার বিভিন্ন এলাকা জুড়ে বোরো ধান চাষ হয় ব্যাপক পরিমাণে। অন্যান্য বছর বৈশাখের এই সময় বিকেলের দিকে প্রায়শই কালবৈশাখীর তান্ডব দেখা যায়। কিন্তু এই বছর তীব্র তাপপ্রবাহে দেখা যায়নি সেই ছবি।

আর তাতেই নাকি উপকার হয়েছে জেলার ধান চাষিদের। অন্যদিকে জেলার কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বছর পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। মূলত আমন ধান চাষের মরশুম শেষ হবার পরে বোরো ধানের চাষ শুরু হয় বাংলার কার্তিক মাসের মাঝামাঝি বোরো ধান রোপন করা হয়। সেই ধান কাটা ও ঝাড়ার কাজ চলে বাংলার বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ ও অর্থাৎ ইংরেজি এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত। তীব্র গরমের স্বস্তির বৃষ্টির দেখার না মেলায় রাজ্যবাসীর নাভিশ্বাস অবস্থা হলেও, এতে খুশি পূর্ব বর্ধমানের বোরো ধান চাষিরা। কালবৈশাখীর দাপট পাকা ধানে মই না দেওয়ায় দহন জ্বালা সহ্য করেও, কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারার আশায় মুখে হাসি ফুটেছে তাদের।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী