৮১ বছর বয়সের নিপুন হাতে দেওয়াল লিখছেন দেবাশীষ বসু

Lok Sabha Election 2024: দলকে ভালোবেসে ৮১ বছর বয়সেও বিনা পারিশ্রমিকে দেওয়াল লিখছেন বোস দা 

হুগলি: বয়স ৮১ বছর, বার্ধক্যের ছাপ চোখে মুখে স্পষ্ট। তবে বার্ধক্যের প্রভাব পড়েনি তুলির টানে। ৮১ বছর বয়সেও রং তুলি হাতে ধরলে একটুও হাত কাঁপে না পান্ডুয়ার দেবাশীষ বসুর। সকাল থেকে সন্ধ্যা অক্লান্তভাবে বিনা পারিশ্রমিকে একের পর এক দেওয়াল লিখন ফুটিয়ে তুলছেন এলাকার সকলের প্রিয় বোস দা। ভোটের সময় যখন দেয়াল লিখনের চাহিদা তুঙ্গে সেই সময় বিভিন্ন দেওয়াল লিখন শিল্পীরা একটু বাড়তি রোজগারের আশায় বুক বাঁধছেন। ঠিক তার বিপরীত পান্দুয়ার দেবাশীষ বসু ওরফে বোস দা। দেওয়াল লিখন তিনিও করছেন তবে পারিশ্রমিক নিয়ে নয় বরং ভালোবাসা থেকে। তৃণমূল দলকে ভালোবেসেই প্রতি বছর ভোটের সময় দেওয়াল লিখনের জন্য এগিয়ে আসেন দেবাশিস বাবু। উল্লেখ্য তিনি যেমন দেওয়াল লেখার জন্য কোন পারিশ্রমিক নেন না ঠিক তেমনি তৃণমূল ছাড়া অন্য কোন দলের হয়ে তিনি দেওয়াল ও লেখেন না।

আরও পড়ুন:  রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘুগনির স্বাদ নেওয়া, কখনও নেমে পড়ে আলু চাষের মাঠে! প্রচারে অক্লান্ত রচনা

দেবাশীষ বাবু ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পাস করার পর হাওড়ায় আইটিআই ভর্তি হন, সেখানে প্রেন্টার ডেকোরেটরের ট্রেনিং নেন। প্রথম জীবনে রাস্তার পাশে থাকা মাইল ফলকে লিখতেন। পরে হোর্ডিং দেওয়াল লেখা শুরু করেন। যদিও জন্মলগ্ন থেকে বোস দার পরিবার ছিল কংগ্রেস ঘরানার। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে তার কাকা অবনী কুমার বোস উলুবেরিয়া দক্ষিণ থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন। তখন তিনি কাকার হয়ে দেওয়াল লিখতেন। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করলেন সেই থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচিত দেবাশীষ বাবু।

আরও পড়ুন:  কী কাণ্ড! বাসে উঠে গেলেন এত বড় স্টার… তারকা প্রার্থীকে দেখে চমকে গেল সবাই

হুগলি লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সমর্থনেই এখন চলছে দেওয়াল লিখন । ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় তার হাতেও এখন আর বেশি সময় নেই, এলাকার কয়েকশো দেওয়াল লেখা এখন তার কাঁধে দায়িত্ব পড়েছে। তাই সকাল হলেই রং তুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দেওয়াল লিখতে। এলাকার সবাই বোস দা বলেই চেনেন ৮১ বছরের বৃদ্ধকে।এই বয়সেও তার নিপুন হাতের তুলিতে ফুটিয়ে তোলেন প্রার্থীদের নাম প্রতীক। আদতে উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা হলেও ৪৭ বছর আগে পান্ডুয়ায় চলে আসেন। বর্তমানে তিনি পান্ডুয়ারই বাসিন্দা।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
দেবাশীষ বাবু জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ১৯৯৩ সালে ২১ জুলাই রাইটার্স ফিল্ডিং অভিযানে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়। আঘাত পেয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দুঃখে ১৩ দিন খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বোস দা। মায়ের অনুরোধে খাওয়া দাওয়া করেন। পান্ডুয়া তৃণমূল প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন,বোসদা আমাদের পুরনো কর্মী। ভোটের সময় তিনিই আমাদের ভরসা।

রাহী হালদার