মা ও বাবার সঙ্গে সুজাতা

Alipurduar News: রোদ ঝড় উপেক্ষা করে চা তুলেছেন বাবা-মা, মেয়ে হল এলাকার প্রথম MBBS!

আলিপুরদুয়ার: কঠোর সংগ্রাম করে মেয়েকে ডাক্তারি পড়িয়েছে এই শ্রমিক পরিবার। ডিমা চা বাগান থেকে প্রথম এমবিবিএস পাশ করল সুজাতা মুন্ডা। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এমবিবিএস পাস করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের মেয়ে সুজাতা মুন্ডা। রোদ, বৃষ্টি উপেক্ষা করে চা বাগানে কাজ করে মেয়েকে ডাক্তারি পড়িয়েছিলেন চা বাগানের শ্রমিক সমীরুন মুন্ডা। তিনি কালচিনি ব্লকের ডিমা চা বাগানের নেপালি লাইনের বাসিন্দা।

আরও পড়ুন- মাকে ‘স্ত্রী’ করতে চেয়ে ৬০ বছরের বিধবাকে ধর্ষণ ছেলের! শাস্তি হল ‘দানব’-এর

অবশেষে মেয়ে এমবিবিএস পাস করায় মুখে হাসি ফুটেছে তাঁদের। শ্রমিক পরিবারের সন্তান হওয়ায় এই যাত্রা একদমই সহজ ছিল না সুজাতা ও তার পরিবারের জন্য। প্রথমবারের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে, দ্বিতীয়বার ২০১৮ সালে নীটে উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পায় সুজাতা। তবে তার মা ও বাবা দুজনেই ডিমা চা বাগানের শ্রমিক।

কী ভাবে মেয়েকে ডাক্তারি পড়াবেন তা নিয়েই চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। তবে হার মানেননি। এক মেয়ে ও ছেলে যাতে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে, সেজন্য বছরের পর বছর দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন সমীরুন মুন্ডা ও তাঁর স্ত্রী। বর্তমানে মেয়ে এমবিবিএস পাস করার পর তাঁদের এই কষ্ট যেন স্বার্থক হয়েছে। তাঁদের দেখে অন্যান্য চা শ্রমিক পরিবারের সন্তানরাও পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন এবং চা বলয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন- নিম্নচাপ ফুঁসছে ঠিক ‘এইখানে’! উত্তর থেকে দক্ষিণ সারা সপ্তাহের আবহাওয়ার আপডেট দেখে নিন!

এ বিষয়ে সুজাতার বাবা সমীরুন মুন্ডা বলেন, “স্কুল পর্যন্ত যদি ছেলে মেয়েদের পড়াতে পারে, তাহলে আরও কিছু বছর কষ্ট করেও তারা পড়াতে পারবে। যা সঞ্চয় করেছিলাম, তা সবটাই ছেলে ও মেয়ের পড়াশোনায় চলে গিয়েছে। এখনও জীর্ণ অবস্থায় থাকা ঘরই আমাদের পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই।” আরও বলেন, “যখন মেয়ে ডাক্তারি পড়তে চেয়েছিল তখন কী ভাবে এর খরচ চালাব এ নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। সেখানে আমাদের সম্প্রদায়ের একাধিক মানুষ সাহায্য করেছে।”

এই বিষয়ে সুজাতা মুন্ডা বলে, “অভাব অনটন থাকা সত্ত্বেও বাবা মা সব সময় পাশে ছিল। ফলে হার না মেনে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলাম। আর তার ফলস্বরূপই হয়তো আমার এই ফল।আগামীতে চা বলয়ের মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে চাই।”

অনন্যা দে