নদী পরিষ্কার করতে ব্যস্ত রাজকুমার দাস

River Cleaning Man: নেশার বশেই নদী পরিষ্কার করেন ইনি, কারণ জানলে আরও অবাক হবেন

কোচবিহার: জেলার সদর শহরের একেবারেই পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে তোর্ষা নদী। এই নদীর একটি অংশ জঞ্জাল এবং আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। মূল নদী থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কারণে জৌলুস হারিয়েছে এই অংশটি। ফলে সারাটা বছর আগাছা, কচুরিপানা ও জঞ্জালে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। নদীর এই অংশে জঞ্জাল ও আগাছা থাকার কারণে সাপের উপদ্রব’ও বেড়েছে। দু’পাশে বেশ কিছু জনবসতি রয়েছে। সেই এলাকায় প্রায়শই নদীর এই অংশ থেকে সাপ ঢুকে পড়ার কথা শোনা যায়। এখানে নির্বিষ থেকে শুরু করে বিষধর সাপেরাও রয়েছে। গোখরো, কালাচ, দাঁড়াস, কেউটে, শঙ্খচূড়, অজগর সাপ প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায়।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় রাজকুমার দাস তোর্ষা নদীর আবর্জনাাময় অংশটি পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রতি বর্ষায় তিনি এই কাজ করেন। থার্মোকলের ভেলা তৈরি করে তাতে চেপে একাই নদীতে নেমে জঞ্জাল পরিষ্কার করতে থাকেন। এমন উদ্যোগ প্রসঙ্গে রাজকুমারবাবু জানিয়েছেন, তিনি পেশায় একজন অতি ক্ষুদ্র মাপের জেলে। নদী থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। ফলে নোংরা নদী দেখলেই তাঁর খারাপ লাগে। তিনি প্রতি বছর এভাবেই নদী পরিষ্কার করেন। বছরের অন্যান্য সময় নদী পরিষ্কার করা যায় না জল না থাকার কারণে। তবে বর্ষায় জল বাড়লে সহজেই নদী পরিষ্কার করা সম্ভব হয়। তাই বর্ষা এলেই লেগে পড়েন এই কাজে।

আর‌ও পড়ুন: সুভাষের বাল্য অবস্থা থেকে এখনের সমাজ, অভিনয় নাকি বাস্তবতা?

তিনি আরও জানান, সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে এই কাজ করেন তিনি। এরজন্য সরকারিভাবে কিংবা কারোর কাছ থেকে পারিশ্রমিক বাবদ একটা টাকাও নেন না তিনি। তবে তাঁর কাজে অনেকের উপকার হয় এবং নদী পরিষ্কার হয়। তাই তিনি এই কাজ করে বেশ আনন্দ পেয়ে থাকেন। সম্পূর্ণ নদী পরিষ্কার করা তাঁর একার পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে তিনি যতটুকু পারেন নিজের উদ্যোগে তাঁর কাজের ফাঁকে তিনি করে থাকেন। বেশ কয়েকবছর ধরে বর্ষার মরশুম আসলেই একপ্রকার নেশার বশেই তিনি করেন এই কাজ। এতে তিনি প্রতিনিয়িত বহু মানুষের ভালবাসা পেয়ে থাকেন প্রচুর। বহু মানুষ অবাক হয়ে দাড়িয়ে তাঁর এই কাজ দেখে থাকেন।

সার্থক পণ্ডিত