মাটি নিয়ে নিমগাছে দিতে আসছেন মহিলারা

Old Traditions: বসুন্ধরার মাটি নিবেদন করেন পুণ্যার্থীরা, প্রাচীন রীতি মেনে আজও পূজিতা দেবী নন্দিনী

মৈনাক দেবনাথ, নদিয়া: দেবী নন্দিনী পুজোর কথা শুনেছেন! স্নান সেরে বসুন্ধরার মাটির ঢেলা মাথায় করে বয়ে নিয়ে এসে পুজো দেন ভক্তরা, বর্তমানে মাটির পাহাড় তৈরি হয়েছে সেখানে। নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সগুনা এলাকায় শতবর্ষ প্রাচীন নন্দিনী পুজো। এলাকার মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধি, সন্তানহীনতা এবং ব্যথা সংক্রান্ত নানা রোগ সেরে গিয়েছে এখানে পুজো দিয়ে। সন্তানাদির জন্ম এবং তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য মায়েরা এখানকার মাটি মেখে থাকেন।শুধুমাত্র এই গ্রাম নয়, আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও  আজকের দিনে নন্দিনী দেবীর পুজোতে মাটি দিতে উপস্থিত হন ভক্তরা।

এক সময় পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গায় এখন পলি পড়েছে। তবে যখন এই খাতে জল বয়ে যেত, সেখান থেকে স্নান করে এবং চাষের জমি থেকে মাটি মাথায় নিয়ে, পাহাড়সম চূড়ায় নিম গাছের গোড়ায় পুজো দিয়ে থাকেন পুণ্যার্থীরা। তবে কোনও মূর্তি নয়, জাগ্রত সুউচ্চ টিলা ভূমি এবং গাছের গোড়াই এখানে দেবতা।

আরও পড়ুন : চাকরি! ভ্রমণ! নতুন প্রেম! চলতি জুন মাসেই সুখের বাম্পার বর্ষা এই ৫ রাশির জীবনে

মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার পর ভক্তরা খিচুড়ি এবং বিভিন্ন তরকারি ভোগের প্রসাদ বিতরণ করেন আগত হাজার হাজার ভক্তবৃন্দকে। এই উপলক্ষে প্রত্যেক বাড়িতে এদিন রান্না বন্ধ। মহিলারা সকলে এসে হাতে হাত লাগিয়ে রান্নার কাজ করে থাকেন। বর্তমানে এই পুজো ঐতিহ্য এবং পরম্পরায় পরিণত হয়েছে। তবে প্রত্যেকের মুখেই বিষাদের সুর। হাজার হাজার ভক্তদের স্নান করার জলের অভাব, মহিলাদের শৌচাগার এবং স্নানের পর ভিজে কাপড় জামা পরিবর্তনের ঘর, বিপজ্জনক উচ্চতায় উঠতে সিঁড়ি, উচ্চ বাতিস্তম্ভ , পানীয় জলের কল-এ সবই প্রয়োজন। অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য হোক বা সমিতি কিংবা জেলা পরিষদ-কেউ কখনওই খোঁজ নিয়ে , তৎপর হননি। উদ্যোক্তারা জানালেন পুজো ঘিরে পাঁচ দিন ধরে চলে মেলা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।