বসিরহাট : পাড়ার মাঠে শৈশবের ফুটবল খেললেন বৃদ্ধরা। প্রত্যেকের বয়স ৫০ এর বছরের ওপরে। কারো বা ৬০ পেরিয়েছে। বয়সের ভারে অনেকের চামড়া কুঁচকে গেছে প্রায়। এ বয়সে খেলার সঙ্গে সম্পর্ক মানায় না। খেলাকে সবাই একটা নির্দিষ্ট বয়সের ফ্রেমে বাঁধেন। শুরুর সময় নির্ধারিত না হলেও শেষটা সবাই মানেন। শিশু থেকেই নানা খেলার মাধ্যমে সবাই বড় হয়। একটা বয়স পর্যন্ত অনেকেই খেলেন। এরপর ছেড়ে দেন। কিন্তু সেসব খেলা ছেড়ে দেওয়ার কয়েক বছর পর বৃদ্ধ বয়সে এসে খেলায় মেতে উঠলেন প্রবীণরা। বৃদ্ধ বয়সে যেন শৈশবের স্মৃতিচারণ।
আরও পড়ুন: নোনা মাটি হবে উর্বর! সুন্দরবনে ‘ধনচে’ চাষেই চাষযোগ্য হচ্ছে জমি
বার্ধক্যের কারণে খেলা অনেকটা এলোমেলো হলেও বয়সের বাধা জয় করার জন্যই অগ্রজরা খেলায় মেতে উঠে। যদিও এ খেলা প্রতিযোগিতামূলক না হলেও অগ্রজদের একঘেঁয়েমি এবং মানসিকতার পরিবর্তনের জন্য এ খেলার উদ্যোগ নেন ২৪ পরগনা জেলার মিনাখার নেরুলিতে যুব ইউনিয়ন নামে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। চুলে পাক ধরেছে, গায়ের চামড়া যেন গুটিয়ে গেছে, আগের মত তেমন আর শারীরিক সক্ষমতা নেই তবুও একসময়ের বাল্যবন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে পড়ার সময় ফুটবল, ডাংগুলি, টায়ার চালানো সহ একাধিক স্মৃতি ছিল সেই সময় যেন ফিরে পেল বৃদ্ধরা। ব্যতিক্রমই খেলা দেখতে মিনাখাঁর নেরুলি গাজী পাড়া এলাকায় উৎসুক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অন্তত প্রবীণদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাদের মানসকিতার পরিবর্তনের এমন প্রয়াস। পঞ্চাশোর্ধ্ব খেলোয়াড় বয়সে ন্যুব্জ হলেও খেলার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতার কোনো ঘাটতি ছিল না।
আরও পড়ুন: ফিরে আসবে নব্যতা! ইছামতিতে শুরু হল বড় সংস্কারের কাজ
মনে হয় যেন সেই নবীন বয়সের খেলায় মেতে উঠেছে। কিন্তু বয়সের সঙ্গে খেলার মিল না থাকলেও রেফারির বাঁশির শব্দ আর ফুটবলের পিছু ছাড়ছেন না কেউই।একটি বল যেন অগ্রজদের বড় সম্পদ। মনোবল থাকলেও শারীরিক অক্ষমতার কারণে যৌবনকালের মতো ফুটবলের সঙ্গে দৌড়াতে পারছে না। তারপরেও চেষ্টায় কোন খামতি ছিল না। নির্ভয়ই ছুটে চলছে মাঠে, বলটি নিয়ে গোল দিতে যেতেই হবে। অগ্রজদের এমন খেলা দেখতে আবাল-বৃদ্ধ বনিতা সকলেই এসেছেন। ফুটবল খেলছেন প্রবীণরা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোক্তা ইমরান গাজী জানান, বর্তমান প্রজন্মের কিশোর থেকে যুবকরা মোবাইল ইন্টারনেটে ব্যস্ত। এক সময় এই সমস্ত বয়স্ক ব্যাক্তিরায় মাঠে খেলা করতেন। তাদের দ্বারা সেই পুরনো স্মৃতিকে আরও একবার ফিরিয়ে আনা হল।
জুলফিকার মোল্লা