ছোটবেলা থেকেই আমরা বিভিন্ন কবিতা ও প্রবন্ধে পড়ে আসছি যে, বনে কস্তুরী নামে একটি হরিণ আছে, যার নাভি থেকেপৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুগন্ধ বের হয়। এই সুগন্ধির চাহিদা মানুষের মধ্যে এতটাই প্রবল যে, এটি পেতে ব্যাপক হারে হরিণ শিকার করা হয়েছে।যাই হোক, অনেকে এই সমস্ত তথ্যকে নিছক ভুল ধারণা হিসাবে দেখেন। এমন পরিস্থিতিতে, আজ লোকাল 18 আপনাদের সাথে “কস্তুরী” নামের এই বিশেষ হরিণ এবং এর নাভি থেকে আসা চমৎকার সুগন্ধ সম্পর্কে কিছু বাস্তব তথ্য শেয়ার করতে চলেছে।প্রকৃতি পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণী সোসাইটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক অভিষেক,। গত ২৫ বছর ধরে বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছেন তিনি। ব্যাখ্যা করেছেন যে , “কস্তুরি” একটি বিশেষ হরিণ, যা সাধারণ হরিণ এবং কৃষ্ণসার থেকে আলাদা। ইংরেজিতে একে বলা হয় Musk Deer, যা মূলত অ্যান্টিলোপ হরিণের প্রজাতির অধীনে আসে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কস্তুরী হরিণের নাভিতে একটি থলি রয়েছে, যা কস্তুরী নামক উপাদানে পূর্ণ। এই উপাদানটির গন্ধ দারুন। এই সুগন্ধকে বিশ্বের সেরা সুগন্ধির মধ্যে গণ্য হয়েছে। আপনি জেনে অবাক হবেন যে “মাস্ক”, বিশ্বের সেরা পারফিউমগুলির মধ্যে একটি। এটি কস্তুরী থেকে তৈরি করা হয়, তাই এটি কস্তুরী নামে পরিচিত।অভিষেকের মতে, হরিণ যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তাদের নাভিতে উপস্থিত কস্তুরীর সুগন্ধও বৃদ্ধি পায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই মন্ত্রমুগ্ধ উপাদানটি শুধুমাত্র পুরুষ হরিণের মধ্যে পাওয়া যায়, মহিলারা কস্তুরীতে পাওয়া যায় না।বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষ হরিণের নাভিতে একটি চামড়ার বলের মতো একটি থলি থাকে, যার ভিতরে একটি সুগন্ধি উপাদান , যা আধা-কঠিন (জেলির মতো) জিনিসে পূর্ণ থাকে। এটি উল্লেখযোগ্য যে এটি কস্তুরী নামে পরিচিত। হরিণের বয়স বাড়ার সাথে সাথে কস্তুরীও শুকিয়ে যেতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত শুকিয়ে স্ফটিকের আকার ধারণ করে।আপনি জেনে অবাক হবেন যে কস্তুরীর সুগন্ধ খুবই হালকা, আকর্ষণীয় এবং টেকসই৷ এই সুগন্ধীর দাম ও ব্যাপাক৷ এর এক গ্রামের দাম ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বলা হয়।আরও বলা হয় যে, হরিণ তার নাভি থেকে আসা কস্তুরীর সুগন্ধে এতটাই মত্ত হয়ে ওঠে যে সারা জীবন তার সন্ধানেই সে ঘুরে বেড়ায়। আশ্চর্যের বিষয় হল হরিণ নিজে জানতেই পারে না যে, তার নাভি থেকেই কস্তুরীর সুগন্ধী আসছে৷
