পাঁচমিশালি GK: ভারতের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ‘বিক্রি’ করে দিয়েছেন তাজমহল-পার্লামেন্ট! কে জানেন তিনি? গোটা দুনিয়া চেনে Gallery October 20, 2024 Bangla Digital Desk কখনও যদি বলা হয় তাজমহল বিক্রি করার কথা, আপনি কি বিশ্বাস করবেন? তাজমহল, রাষ্ট্রপতি ভবন, নিদেনপক্ষে লালকেল্লা, সংসদ ভবন? আপনি এসব পাগলের প্রলাপ বলেই মনে করবেন। কিন্তু একসময় এই সব কাজগুলোর সবই ‘দক্ষতার’ সঙ্গে করেছিলেন এক ব্যক্তি। তার নাম মিঃ নটবরলাল, ভারতের সর্বকালের সেরা ‘ছদ্মবেশী’। ওই ব্যক্তির আসল নাম মিথিলেশ কুমার শ্রীবাস্তব। যদিও নটবরলাল নামেই খ্যাত। তাকে ভারতের সর্বকালের সেরা প্রতারকের আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। তার অপরাধগুলো এখনও যে কাউকে ধাঁধায় ফেলে দেবে। ১৯১২ সালে ভারতের বিহারের জিরাদাই জন্ম হয় মিথিলের শ্রীবাস্তবের। মেধাবী মিথিলেশ স্নাতক পাশ করার পরেই আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে। আর তখন থেকেই সে প্রতারণা শুরু করে। নিজের গ্রামের এক লোকের সঙ্গে তিনি প্রথম প্রতারণা করেন। সেই ব্যক্তি শহরের ব্যাংকে টাকা জমা করতে দিয়েছিলেন। জমা করার সময় ওই ব্যক্তির সই নকল করে ব্যাংক থেকে প্রায় এক হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেন। ১৯৩০ সালের দিকে এক হাজার টাকার বর্তমান মূল্য ছিল অনেকটাই। অসম্ভব বুদ্ধি এবং চতুরতার জন্য খ্যাত ছিলেন এই নটবরলাল। সেই সঙ্গে খ্যাত ছিলেন ছদ্মবেশ ধারণে। ৫০টিরও বেশি ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন নটবরলাল! আর শুধু ছদ্মবেশ নয়, সই জাল করার ব্যাপারেও তিনি ছিলেন বিরাট ক্ষমতার অধিকারী। তবে অল্পতে খুশি ছিলেন না তিনি। আর সেই কারণেই ঐতিহাসিক জায়গাগুলি বেচতে শুরু করেন নটবরলাল। তাজমহল, লালকেল্লা, মায় সংসদ ভবনটিও বেচে দিয়েছিলেন এই মানুষটি! টাটা, বিড়লাদের ঘোল খাওয়ানো এই মানুষটির পিছনে যে পুলিশ ছুটবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। ১০০টিরও বেশি মামলা ছিল তাঁর নামে, ভারতের ৮টা রাজ্যের পুলিশ তাঁর খোঁজে দৌড় বেড়িয়েছে। মোট ৯ বার আটকও হয়েছিলেন নটবরলাল। কিন্তু প্রত্যেকবারেই পালিয়ে এসেছিলেন তিনি, কেউ ধরতেও পারেনি। শেষবারটি ছিল ১৯৯৬ সালে, শরীর অসুস্থ বলে কানপুর জেল থেকে দিল্লি এইমসের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বেপাত্তা হয়ে যান। প্রসঙ্গত, তখন তাঁর বয়স ৮৪! নিজের মৃত্যু নিয়েও ধন্দে রেখে গেছেন নটবরলাল। অবশ্য গা ঢাকা দিতে যিনি এত পারদর্শী, তাঁর পক্ষে তো এ আর কিছুই নয়! ২০০৯ সালের ২৫ জুলাই মারা গিয়েছিলেন নটবরলাল। যদিও তার আসল মৃত্যু তারিখ জানা যায়নি। প্রতারকের তকমা পেলেও বাংরার মানুষের কাছে নটবরলাল আজও এক গর্বের নাম। তার জীবনী নিয়ে দুটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৭৯ সালে ‘মি. নটবরলাল’ এবং ২০১৪ সালে ‘রাজা নটবরলাল’ । এ ছাড়াও নটবরলালের জীবনী নিয়ে ডকুমেন্টরিও তৈরি হয়েছে। যা একটি ক্রাইম টেলিভিশন প্রোগ্রামে ২০০৪ সালে প্রচার হয়েছিল।