প্রিয়া

Jalpaiguri News: সংসার চালাতে টোটোই ভরসা স্নাতক প্রিয়ার! ইচ্ছেশক্তির কাছে হারল মানল সব বাধা

জলপাইগুড়ি: এ যেন হার না মানার এক কাহিনি! ইচ্ছেশক্তির কাছে মাথা ঝোঁকাতেই হয়েছে জলপাইগুড়ির প্রিয়ার বিমুখ পরিস্থিতিকে। দুর্ঘটনায় বিছানায় শয্যাশায়ী বাবা। সংসারের হাল ধরতে টোটো চালিয়ে জলপাইগুড়িতে বিভিন্ন দোকানে দোকানে ঘুরে বিস্কুট বিক্রি করছেন প্রিয়া। সংসারের যে অগাধ দায়িত্ব তার কাঁধে!

দুই বোনের নার্সিং এবং আইন কলেজের পড়াশোনার খরচ, অসুস্থ বাবার চিকিৎসা-সহ সংসারের হাল ধরতে এই মেয়েই ভরসা। তাই টোটো করে চলে বেকারির জিনিস ফেরির লড়াই। প্রিয়া জোরপাকরি আব্দুল গনি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পর ময়নাগুড়ি কলেজে স্নাতক করেছেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল আরও পড়াশোনা করার। কিন্তু বিমুখ পরিস্থিতির চাপে তা আর হয়ে ওঠেনি। আচমকাই এক দুর্ঘটনায় যেন পায়ের তলার মাটি সরে যায় এক নিমেষে। বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন বাবা। বাড়িতে রয়েছে আরও দুই বোন। সকলের কথা ভেবে প্রিয়াই হয়ে ওঠেন বাড়ির রক্ষাকর্তা।

প্রিয়ার এই করুণ কাহিনিআমরা জানতে চাই প্রিয়ার কাছে। জানা যায়, প্রিয়ার বাবা আগে টোটো করে পাউরুটি, বিস্কুট ইত্যাদি ফেরি করে বিক্রি করতেন । গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক সন্ধ্যায় ফেরি করতে গিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হন তিনি। তারপর তার শুরু হয় চিকিৎসা, পাশাপাশি নানারকম অপারেশন । সে সময় প্রচুর অর্থের বিনিময়ে তাঁকে কোনও রকম বেঁচে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। তখন থেকেই বাড়িতেই শয্যাশায়ী হয়ে রয়েছেন প্রিয়ার বাবা। বাড়িতে তিন বোন ও বাবা, মা’কে নিয়ে পাঁচ জনের পরিবার! কীভাবে চলবে সংসার? কীভাবেই বা দু’ বোনের পড়াশোনার খরচ চলবে?

আরও পড়ুন: পাল-সেন যুগের শিল্পকলা কেমন ছিল? জানতে চাইলে আসতে হবে এই জাদুঘরে

আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিতে ধস! জলে ভাসছে রাইগাঁও এলাকা! বিপর্যস্ত জনজীবন, চারদিকে আতঙ্ক

সব মিলিয়ে অথৈ জলে পড়তে হয় পরিবারকে। তারপরই সংসারের হাল ধরতে বাবার পেশায় নামতে হয় বাড়ির বড় মেয়ে প্রিয়াকে। এক বোন নার্সিং নিয়ে পড়ছেন ব্যঙ্গালোরে। আরেক বোন কোচবিহারে আইন কলেজে পড়াশোনা করছেন । প্রায় চার মাস যাবৎ চলছে এই প্রিয়ার এই ব্যবসা। প্রিয়ার কথায়, “সমস্যা হয় না দিব্যি করে যাচ্ছি!” এই বয়সে প্রিয়া যেভাবে সংসারের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তাতে গর্বিত এলাকার সকলে।

সুরজিৎ দে