পাঁচমিশালি History: পাহাড়ের মাথায় ভাঙল বিমান, ভয়ঙ্কর ৭২ দিন! খিদের জ্বালায় সহযাত্রীদের মাংস খেল বাকিরা! Gallery June 27, 2024 Bangla Digital Desk যদি একদল মানুষ বলেন, বেঁচে থাকার জন্য আমরা নিজেদের বন্ধুদের মাংস খেয়েছি। এই কাজের জন্য আমরা মোটেও অনুতপ্ত নই। এ কথা শোনার পর যে কোনও সুস্থ মানুষের পক্ষেই স্বাভাবিক থাকা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে পুরো ঘটনা জানার পর তাঁরাও ভাববেন এ ছাড়া আর কী ই বা করার ছিল। এই ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে পঞ্চাশ বছর। ১৯৭২ সালের ১৩ অক্টোবর, উরুগুয়ে এয়ারফোর্সের এক চাটার্ড বিমানে(ফ্লাইট ৫৭১) রাগবি খেলোয়াড়দের এক দল তাদের পরিবারের সঙ্গে চিলি যাচ্ছিল। আন্দিজ পর্বতের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় খারাপ আবহাওয়ার জন্য দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমান। ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে ২৯ জনের মৃত্যু হয়। পরে তুষারধসে পড়ে আরও ১৩ জন বিমানযাত্রীর মৃত্যু হয়। এত কিছুর পরেও বেঁচে ছিলেন ১৬ জন। বিমান দুর্ঘটনা বা তুষারধস থেকে বেঁচে গেলেও তারপর থেকে প্রতি মুহূর্তে তাঁরা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করতে থাকেন। দিন কয়েকের মধ্যেই ফুরিয়ে যায় খাবার। অসম্ভব কষ্ট আর পেটের খিদে নিয়ে বাঁচাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। উদ্ধারকারী দলও তাঁদের খুঁজে পেতে ব্যর্থ হচ্ছিল। বেঁচে থাকা সেই ১৬ জন মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে এনে দাঁড় করায় খাবারের অভাব। এমন এক সময় ডাক্তারি পড়ুয়া রবার্তো ক্যানেসা সবাইকে বলেন, বেঁচে থাকতে হলে আমাদের মৃত সঙ্গীদের মাংসই খেতে হবে। সবাই চুপ হয়ে যায় সেই কথা শুনে। সবার মনের কথা বুঝতে পেরে ক্যানেসাই প্রথমে এগিয়ে আসে। ভাঙা বোতলের কাঁচ যোগাড় করে তা দিয়ে সে মৃতদেহের মাংস কেটে আনে। সেই শুরু… তারপর যতদিন তাঁরা ওই অবস্থায় ছিলেন, ততদিন মৃত মানুষের দেহাংশ খেয়েই বেঁচে ছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা সবাই ঠিক করেন , তাঁদের মধ্যেও যদি কেউ মারা যান, তাহলে তাঁর মাংসও বেঁচে থাকা সঙ্গীরা খেতে পারবেন। এই ভাবেই তাঁরা বহু দিন বেঁচে ছিলেন। কতদিন জানেন? ৭২ দিন! দীর্ঘ ৭২ দিন পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনার সাক্ষী রোমান সাবেল্লার। তিনি জানান, মৃত সঙ্গীদের মাংস ছিঁড়ে খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া ভয়ঙ্কর ছিল। কিন্তু সেই কাজটাই তাঁদের করতে হয়েছিল। এরপর ১৯৭২-এর ২৩ ডিসেম্বর উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টার থেকে তাঁদের দেখতে পায়, এরপরই শুরু হয় উদ্ধার কাজ। আন্দিজ পর্বতের সেই দুর্ঘটনা নিয়ে লেখা হয়েছে বই। পিয়ার্স পলের লেখা সেই বিয়ের নাম, ‘অ্যালাইভঃ দ্যা স্টোরি অব আন্দিজ সার্ভাইভার’। এই ঘটনা নিয়ে ১৯৯৩ সালে সিনেমাও তৈরি হয় হলিউডে।