পাঁচমিশালি Lawrence Bishnoi: জেল থেকেই কীভাবে গ্যাং চালাচ্ছেন লরেন্স বিষ্ণোই? কেন তিনি সলমন খানের উপর খাপ্পা, দেখে নিন বিশদে Gallery October 15, 2024 Bangla Digital Desk সলমন খানকে খুনের হুমকি, সিধু মুসেওয়ালার নৃশংস হত্যাকাণ্ড, দক্ষিণ দিল্লির জিম মালিককে গুলি করে খুন এবং এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির হত্যা। এই সবকটা ঘটনা এক সুতোয় গাঁথা। আর সেই সুতোর নাম লরেন্স বিষ্ণোই। গুজরাতের সবরমতী জেলে বন্দী লরেন্স বিষ্ণোই। কিন্তু তারপরেও আটকানো যাচ্ছে না তাঁকে। শুধু একটা মোবাইল ফোন আর ভিপিএন কানেকশনই তাঁর হাতিয়ার। জেল থেকেই চালাচ্ছেন পুরো গ্যাং। পুলিশ, প্রশাসনের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে এক জেলবন্দী আসামি। বাবা সিদ্দিকিকে খুনের পর থেকেই থমথম করছে গোটা মুম্বই। তিনি শুধু এনসিপি নেতা নন, প্রাক্তন বিধায়ক এবং সলমন খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁকে খুনের পিছনে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের হাত রয়েছে বলে অনুমান করছেন অনেকেই। দানা বাঁধছে আশঙ্কা। মুম্বইয়ের ঘুমন্ত আন্ডারওয়ার্ল্ড না আবার এই ঘটনায় জেগে ওঠে। দাউদ ইব্রাহিম, ছোটা রাজন, আবু সালেমরা না আবার ময়দানে নেমে পড়েন। আবার না শুরু হয় ৭০-এর দশকের গ্যাং ওয়ার। গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলের ভিতর থেকে কীভাবে গ্যাং চালাচ্ছেন বিষ্ণোই? লরেন্স বিষ্ণোই কীভাবে হয়ে উঠলেন গ্যাংস্টার বিষ্ণোই? কোন হাইপ্রোফাইল মামলাগুলির সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়েছে? কে এই লরেন্স বিষ্ণোই ? পঞ্জাবের ফেরজোপুর জেলার ধাতারানওয়ালি গ্রামের এক ধনী কৃষক পরিবারের সন্তান লরেন্স বিষ্ণোই। বর্তমানে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা। লরেন্স বিষ্ণোইয়ের এখন বয়স ৩১ বছর। ২০১০ সালে তিনি চণ্ডীগড় কলেজে ভর্তি হন। কিছুদিনের মধ্যেই যোগ দেন ছাত্র রাজনীতিতে। ২০১১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি পঞ্জাব ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। ২০১০ সালের এপ্রিলে খুনের চেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। একই সঙ্গে বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে দায়ের হয় এফআইআর। দুটি মামলাই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০১২ সালে জেল হয় বিষ্ণোইয়ের। মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্টে তাঁকে তিহাড়ে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৩ সালে তিনি সরকারি কলেজ নির্বাচনের জয়ী প্রার্থী এবং লুধিয়ানা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে গুলি করে খুন করেন। বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নেতাদের খুন, চাঁদাবাজি-সহ এক ডজনের বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাঁর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে মদ এবং অস্ত্র চোরাচালানের কারবার চালানোর অভিযোগও রয়েছে। সীমান্ত চোরাচালানের একটি মামলায় তাঁকে গুজরাতে নিয়ে যায় এটিএস। এনআইএ-এর বক্তব্য অনুযায়ী, বিষ্ণোইয়ের গ্যাংয়ে ৫টি রাজ্যে ৭০০-এর বেশি শ্যুটার রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ শ্যুটার পঞ্জাবের। শুধু তাই নয়, বিষ্ণোইয়ের দলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্রের যোগাযোগ রয়েছে বলেও অনুমান করা হয়। বিষ্ণোই গ্যাংস্টার জগগু ভগবানপুরিয়ার কাছের লোক। হরিয়ানার গ্যাংস্টার কালা জাথেদির সঙ্গেও তাঁর বন্ধুত্ব রয়েছে। লরেন্সের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন গোল্ডি ব্রার এবং ভাই আনমোল বিষ্ণোই। গোল্ডি ব্রারই তৃণমূল স্তরে গ্যাং চালান। শ্যুটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। গায়ক সিধু মুসেওয়ালা হত্যার সঙ্গে আনমোল জড়িত বলে জানা যায়। এনআইএ-এর মতে, বিষ্ণোই জেল থেকে ভিওআইপি ও ‘ডাব্বা কলিং’-এর মতো উন্নত কমিউনিকেশন পদ্ধতির সাহায্যে গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। অনেক অপরাধীই ‘ডাব্বা কলিং’ ব্যবহার করেন। মোবাইল নেটওয়ার্ককে বাইপাস করে ট্রেস করা যায় না এমন কল করতে এই কমিউনিকেশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই সলমন খানের উপর খাপ্পা লরেন্স বিষ্ণোই। কৃষ্ণসার হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায় ঈশ্বর বলে মনে করে। ২০১৮ সালে একটি বিবৃতিতে লরেন্স বলেছিলেন, “সলমন খানকে আমরা হত্যা করব। কোনও টাকা চাই না। আমরা ব্যবস্থা নিলেই সবাই জানতে পারবে।’’