পশ্চিম মেদিনীপুর: কয়েকদিন আগে ডেপুটি ডিরেক্টর থেকে বারাণসী আইআইটি ডিরেক্টর হয়েছেন অমিত পাত্র। এবার সেই পদে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন এক মহিলা। যার কৃতিত্ব, গবেষণা এবং আবিষ্কার দেশের কাছে এক মাইল ফলক। প্রথম ‘মহিলা’ হিসেবে আইআইটি খড়্গপুরের ডেপুটি ডিরেক্টর হচ্ছেন অধ্যাপক রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়।
একটি প্রেস বিবৃতিতে এমনই জানিয়েছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিকভাবে একটি উচ্চ পদে মহিলা অধ্যাপিকার অভিষেক সমাজের কাছে এক বার্তা-বহ বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। স্বাভাবিক ভাবে ডেপুটি ডিরেক্টর পদে গুণী মহিলার দায়িত্ব গ্রহণে খুশির আবহাওয়া প্রাচীনতম প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়্গপুরে।
আরও পড়ুন: JEE পাশ না করলেও চিন্তা নেই, এই ৮ জায়গায় B-TECH করার দারুণ সুযোগ! কলকাতার কোন কলেজ?
আইআইটি খড়্গপুরের নতুন ডেপুটি ডিরেক্টর হতে চলেছেন অধ্যাপক রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘প্রথম’ মহিলা হিসেবে তিনি আইআইটি খড়্গপুরের সহ-অধিকর্তা বা ডেপুটি ডিরেক্টর হচ্ছেন বলে এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য যে, ভারতের প্রাচীনতম প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান তথা আইআইটি খড়্গপুরের সুদীর্ঘ ৭৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ডেপুটি ডিরেক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ পদে একজন মহিলার ‘অভিষেক’ যে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, তা মানছেন আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে সংশ্লিষ্ট সকলেই।
আরও পড়ুন: দেশের সেরা ১০ মেডিক্যাল কলেজ: প্রথম স্থানে দিল্লির এইমস, তালিকায় ৩ বেসরকারি কলেজও! রইল খুঁটিনাটি
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে অধ্যাপক অমিত পাত্র আইআইটি বারাণসীর ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এবার সেই পদে স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন অধ্যাপক রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, অধ্যাপিকা রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায় আইআইটি খড়্গপুরের পি.কে সিনহা সেন্টার ফর বায়ো এনার্জি অ্যান্ড রিনিউয়েবলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান এবং বর্তমানে চেয়ারপার্সন। গত তিন বছর ধরে তিনি আইআইটি খড়্গপুরের কৃষি ও খাদ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শুধু তাই নয়, আইআইটি খড়্গপুরের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ডিন হিসেবে এবং গ্রামীণ উন্নয়ন, উদ্ভাবনী ও টেকসই প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর উদ্বাবনী ভাবনা ও আবিষ্কার কেবল ভারতেই নয় আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত। জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের আর্থিক ও বৈজ্ঞানিক জগতে অসামান্য অবদান জন্য ICAR-র অসামান্য মহিলা বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি ‘পাঞ্জাবরাও দেশমুখ পুরস্কার’- এ ভূষিত হয়েছেন।
এছাড়াও, ভারতের বায়োটেক রিসার্চ সোসাইটি দ্বারা ‘সেরা মহিলা জীববিজ্ঞানী’; অ্যাসোসিয়েশন ফর ফুড সায়েন্টিস্ট অ্যান্ড টেকনোলজিস্ট (ভারত) থেকে ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’, লুই পাস্তুর পুরস্কার; মদন মোহন মালব্য পুরস্কার এবং রফি আহমেদ কিদওয়াই পুরস্কার-ও পেয়েছেন অধ্যাপক রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন জীববিজ্ঞানী হিসেবে সারা পৃথিবী জুড়ে নিজের অসামান্য প্রতিভা ও উদ্ভাবনী সত্ত্বার স্বাক্ষর রেখেছেন।
এমনই উচ্চ পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর অধ্যাপক রিন্টু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমি গর্বিত ও সম্মানিত। একজন ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে স্বল্প ব্যয়ে শক্তিশালী ও উন্নত প্রযুক্তির আবিষ্কারের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে আইআইটি খড়্গপুরের অসামান্য অবদান তুলে ধরাই আমার লক্ষ্য হবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের প্রাচীনতম এই আইআইটি’র গুরুত্ব ও মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করতেও আমি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।”
রঞ্জন চন্দ