ভারতী মুরমু

Bankura News: পায়ের বুট কেনার পয়সা ছিল না! বর্তমানে অধিনায়কত্ব করছেন বাঁকুড়ার ভারতী

বাঁকুড়া:  সফলতা অনেক ধরনের হয়। পরিশ্রম করে নিজের দুই পায়ে দাঁড়ানো কিংবা পরীক্ষায় ভালো ফল করা। তবে বাঁকুড়ার এই মেয়ের ফুটবলের জগতে যে সফলতা এসেছে সেটা একটা উদাহরণ স্বরূপ। বাঁকুড়ার এই আদিবাসী মেয়ে কিনা রাজ্যের ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন! কথাটা অবিশ্বাস্য লাগলেও সত্যি। এমনই এক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়ে ভারতী। মাত্র দুই বছরের অনুশীলনেই বাজিমাত। পায়ের বুট কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না তার বাবার। তবুও ভারতী দারিদ্রতা এবং প্রতিকূলতাকে জয় করে পশ্চিমবঙ্গের অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক হতে পেরেছেন।

সাম্প্রতিক খেলে এসেছেন পাঞ্জাবে। একের পর এক সিডিউল ফুটবল মাঠে বাংলার হয়ে লড়াই করছে বাঁকুড়ার মেয়ে ভারতী মুর্মু। জেলার আদিবাসী এক মেয়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে উঠে গিয়ে করছেন রাজ্যের অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা দলের অধিনায়কত্ব। শুধু বাঁকুড়ার গর্ব নয়, রাজ্যের জন্যও এ এক গর্বের বিষয়। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর ব্লকের বাঁকাদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া গ্রামের খেটে খাওয়া আদিবাসী পরিবারে মেয়ে ভারতী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের সঙ্গে বাবা-মাকে নিয়ে ছয় জনের পরিবার। এক কথায় নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সংসারে। সময় মত পরনের নতুন পোশাক, খেলার বুট বাবা-মা কিনে দিতে পারেননি। তবুও হাল ছাড়ার মেয়ে নয় ভারতী ও তার বোন। তারা ফুটবল খেলাকে বেছে নিয়েছে। ইতিপূর্বে এই ভারতীকে নিয়ে লোকাল এইট্টিনে খবর করেছি আমরা। তুলে ধরেছিলাম তার লড়াইএর কথা।

লাগাতার দু’বছর ধরে ফুটবল অনুশীলন করছে বাঁকাদহ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সারদা সেবাশ্রম পরিচালিত মা সারদা পাঠদান কেন্দ্রে। ভারতী জানান,”এটার জন্য অনেক কষ্ট করেছি। আশ্রমে প্র্যাকটিস করে কোনওদিন ফুটবল খেলতে পারব ভাবতেই পারিনি। ভবিষ্যতে বড় কিছু করার চেষ্টা করব।” মাত্র দু’বছরের অভিজ্ঞতায় ভারতী মুর্মু বাংলার হয়ে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে গিয়েছে। করছেন রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব।

বাবা-মায়ের অনেক দুঃখ কষ্টের সংসার। লোকের বাড়িতে কাজ করেন তাঁরা। তবুও গর্বে তাঁদের বুক ভরে যায় মেয়ের ফুটবল খেলা দেখে। তবে ভারতী ফুটবলের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও খুবই ভাল। তাঁর স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সহপাঠী সকলেই চাইছেন সফল হোন তিনি।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী