ঝাড়গ্রাম : “আয়রন ম্যান” এর খেতাব জয় করল জঙ্গলমহলের আদিবাসী যুবক। জার্মানতে অনুষ্ঠিত আয়রন ম্যান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মাত্র ৬ ঘন্টা ৩৪ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে চ্যালেঞ্জ কমপ্লিট করে আয়রন ম্যানের খেতাব জয় করে জঙ্গলমহলের ৩৩ বছরের আদিবাসী যুবক জনা মান্ডি। জনা মান্ডির বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের ছত্রি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পালয়ডাঙ্গা গ্রামে। জনা স্কুলে পড়ার সময় আয়রন ম্যান সম্পর্কে জেনেছিল। তখন থেকে তার আয়রন ম্যান হওয়ার ইচ্ছে ছিল প্রবল। আইরন ম্যান প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জিং প্রতিটি খেলা অতি দক্ষতার সঙ্গে সম্পূর্ণ করে খেতাব জয় করে জঙ্গলমহলের এই আদিবাসী যুবক।
প্রতিবছর ইউরোপের কোনও না কোনও দেশে একটি সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত হয় আয়রন ম্যান প্রতিযোগিতা। যেখানে একজন প্রতিযোগীকে প্রথমে ১.৯ কিলোমিটার সাঁতার তারপর ৯০ কিলোমিটার সাইকেলিং এবং ২১.১ কিলোমিটার দৌড় সম্পূর্ণ করতে হয় ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে। আর এটি সফল করতে পরলেই আয়রন ম্যানের খেতাব জয় করতে পারা যায়।
এই বছর সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ জার্মানির ডুইসবর্গে অনুষ্ঠিত হয় আয়রন ম্যান প্রতিযোগিতা। কর্মসূত্রে জার্মানির বার্লিনে থাকায় নিজেকে আর আটকে রাখতে পারেনি জনা মান্ডি। নেমে পড়ে আয়রন ম্যান খেতাব জয়ের লক্ষ্যে। ইউরোপ, আয়ারল্যান্ড, সাউথ আমেরিকা, ব্রাজিল, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত সহ পৃথিবীর নানা প্রান্তের প্রায় ৩৫০০ জন প্রতিযোগী আয়রন ম্যান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
জনা মান্ডি সহ ভারতের মোট ৫ জন এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। ডুইসবার্গে প্রথমে রায়েন নদীর ১.৯ কিলোমিটার মাত্র ৩৭ মিনিটে সাঁতার কেটে পার করেন জনা। তারপর ৩ ঘন্টা ১০ মিনিটে ৯০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে সম্পূর্ণ করে। ২১.১ কিলোমিটার দৌড় দু’ঘণ্টা ২৯ মিনিটে সম্পূর্ণ করে জনা। সাঁতার ,সাইকেলিং এবং দৌড় সম্পন্ন করতে জনার সময় লেগে যায় মাত্র ৬ ঘন্টা ৩৪ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড। আর তারপরেই স্কুল জীবনের দেখা স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় জনার। জঙ্গলমহলের এই যুবক জয়লাভ করে আয়রন ম্যান এর খেতাব।
আরও পড়ুনঃ Rahul Dravid: সব জল্পনার অবসান! ফের কোচের পদে রাহুল দ্রাবিড়, ভারতীয় ক্রিকেটে বড় খবর
জনা মান্ডি বলেন,”স্কুলে পড়ার সময় আয়রন ম্যান সম্পর্কে জেনেছিলাম। তখন থেকেই বড্ড ইচ্ছা ছিল আয়রন ম্যান হওয়ার। আজ সেই ইচ্ছা আমার পূরণ হয়েছে”। জনা ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও শরীরচর্চার সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত রয়েছে। জনার নিজস্ব উদ্যোগে নিজের জন্মভিটায় সাঁকরাইল ব্লকের রামচন্দ্রপুরে খেরওয়াল ফুটবল একাডেমি নামের একটি ফুটবল একাডেমি চালায়। মূলত এলাকার মূলবাসী আদিবাসী ছেলেদের প্রতিভাকে সকলের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একজন কোচ নিযুক্ত করে রেখেছে ।
বুদ্ধদেব বেরা