মানবতার দুই ছবি

Janmashtami 2024: সন্তানহারা মায়ের পাশাপাশি সুলভ শৌচাগারের কর্মীও জন্মাষ্টমীতে লোকনাথধামগামী ভক্তদের সেবায় রত

রুদ্রনারায়ণ রায়, উত্তর ২৪ পরগনা: জন্মাষ্টমী উপলক্ষে জেলার নানা প্রান্ত থেকে বহু ভক্ত পায়ে হেঁটে বাঁক কাঁধে পৌঁছেছেন লোকনাথ ধাম চাকলায়। যশোর রোড, টাকি রোড-সহ বিস্তীর্ণ রাস্তায় ভক্তদের এমন ছবি ধরা পড়ছে। এরই মাঝে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা এলাকায় দেখা গেল ছেলের স্মৃতিতে এক মাকে পায়ে হেঁটে চাকলা ধামে পৌঁছানো ভক্তদের হাতে লজেন্স তুলে দিতে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, এক বছর হল বছর ২৪-এর ছেলে কৃষ্ণ হালদারকে হারিয়েছেন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা রীনা হালদার।

তাঁর ছেলেও জন্মাষ্টমীতে চাকলা মন্দিরে যেতেন। এভাবেই  মাকে বলতেন পথচলতি ভক্তদের হাতে লজেন্স তুলে দিতে। ছেলের মৃত্যুর পর এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে আবারও এসেছে জন্মাষ্টমী তিথি। তাই সোমবার কয়েক প্যাকেট লজেন্স কিনে নিয়ে চৌমাথায় দাঁড়িয়ে পথচলতি লোকনাথধামমুখী ভক্তদের হাতে তুলে দিচ্ছেন এই লজেন্স। ছোট শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক, এমনকি মহিলাদের হাতেও এই লজেন্স তুলে দিয়েই যেন ছেলের শোক কাটিয়ে মিলছে মানসিক শান্তি।

অন্যদিকে, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা এলাকাতে সুলভ শৌচালয় চালানো রাজু দাসও প্রতি মাসের স্বল্প আয়ের এই কাজ করে উপার্জন করা অর্থ থেকেই এদিন পথচলতি ভক্তদের হাতে সামর্থ্য অনুযায়ী তুলে দেন আহার। সারাবছর শৌচালয়ের কাজ করলেও, মানুষের সেবা করার ইচ্ছা থেকেই প্রতি বছর এভাবেই আহার বিলি করে থাকেন জন্মাষ্টমীতে যাওয়া ভক্তদের মধ্যে আর এতেই যেন তৃপ্তি পান তিনি। এদিন মধ্যমগ্রাম চৌমাথা চত্বরে একদিকে যেমন চলছিল আরজিকর কাণ্ড নিয়ে নারীদের প্রতিবাদ সভা। পাশাপাশি ব্যাপক ভিড় ও যান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও দেখা গেল প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছে সবকিছু।

আরও পড়ুন : আজ জন্মাষ্টমীতে বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আবির্ভাব তিথি, জানুন এই তিথিতে তাঁর পুজোর শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত

অন্যান্য বছর যেখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এ বছর যেন ছবি অনেকটাই অন্যরকম। জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল সর্বত্র। যশোর রোড-সহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলিতেও এবার তাই দীর্ঘ যানজটের ছবির দেখা যায়নি বললেই চলে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সারারাত ধরে অগণিত ভক্ত চাকলা মন্দিরের আসেন, বাবা লোকনাথের বিশেষ পুজো উপলক্ষে। আর এর মধ্যে দিয়েই যেন মানবতার ছবি ধরা পড়ল জেলায়।