যক্ষা রোগীদের দত্তক সাংবাদিকদের

East Medinipur News: যক্ষা দূরীকরণে অঙ্গীকার পূর্ব মেদিনীপুরের সাংবাদিকদের

তমলুক: শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে খবর সংগ্রহ করা বা খবর পরিবেশ নয়, এবার আরও বড় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিল সাংবাদিকের সংগঠন। যক্ষা রোগ নির্মূল করতে বড় ভূমিকা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ হল সাংবাদিকেরা। তমলুক মহকুমার সাংবাদিক সংগঠন যক্ষা রোগীর দায়িত্ব নিল। ১৬ জন যক্ষা রোগীর খাদ্য সরবরাহের দায়িত্ব কাদের তুলে নিল সাংবাদিকেরা। সাংবাদিকদের সংগঠন তমলুক জার্নালিস্ট রিক্রিয়েশন ক্লাবের উদ্যোগে তাম্রলিপ্ত পৌরসভা এলাকার সমস্ত যক্ষা রোগীদের উপযুক্ত মানের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য প্রদান করার মাধ্যমে দত্তক নেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১২৮৫ জন সরকারিভাবে নথিভুক্ত যক্ষা রোগী রয়েছেন। এছাড়াও নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার ক্ষেত্রেও এই সংখ্যাটা প্রায় হাজার খানেক। ফলে এই সকল রোগীদের উপযুক্ত চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ মুক্তির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন আহারের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠার আহ্বান জানায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই মত ন্যাশনাল টিবি এলিমিনেশন প্রোগ্রামে বিভিন্ন বেসরকারি কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় নিক্ষয় মিত্রের মাধ্যমে এলাকার যক্ষা রোগীদের দত্তকের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন : দিঘা বেড়ানো অনেক হল! ছোট্ট ছুটিতে যান ৩ নদীর এই সঙ্গমস্থলে, আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য

এলাকার যক্ষা রোগীদের মধ্যে চাল, ডাল, ডিম, সোয়াবিন, তেল, ছোলা, নানান রকমের ফলমূল সহ যাবতীয় পুষ্টিগণ সম্পন্ন আহার বিতরণ করা হয়। আগামী ৬ মাস পর্যন্ত এভাবেই যক্ষা আক্রান্তদের সেবায় এই সকল পুষ্টিগুণ সম্পন্ন আহার তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। যার প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে এদিন পৌরসভা এলাকায় ১৬ জন যক্ষা রোগীকে ৬ মাসের জন্য দত্তক নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদের পক্ষে কাজল মাইতি, শুভময় জানারা। তাদের কথায়, খবর সংগ্রহের পাশাপাশি যক্ষা দূরীকরণের মত এমন সমাজসেবামূলক কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসতে চাই আগামী দিনেও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘উপযুক্ত চিকিৎসার পাশাপাশি এই রোগ সম্পূর্ণরূপে দূরীকরণের ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা অনেকটাই সমস্যা তৈরি করে। তাই যাতে অসহায় আক্রান্তদের পর্যাপ্ত মানের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন আহরের ক্ষেত্রে কোনও রকমের আর্থিক প্রতিবন্ধকতা দেখা দিতে না পারে তার জন্য নিক্ষয় মিত্র প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার সমস্ত সংগঠনের কাছেই আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই যক্ষামুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার লক্ষ্যে রাজ্যের নিরিখে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুর। প্রশাসনিক সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুর মুখ্য স্বাস্থ্য জেলার প্রায় ৬৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে যক্ষা মুক্ত প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্যে জোরদার প্রচার চলে। যক্ষামুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত গড়ে তোলার পাশাপাশি এবার নিক্ষয় মিত্র প্রকল্পের মাধ্যমে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার যক্ষা রোগীদের দত্তক নেওয়ার আহবান জানায় প্রশাসন।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

মূলত, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষজনদের পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন আহারে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই এমন উদ্যোগ বলে দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। আর ইতিমধ্যেই তাদের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে একাধিক বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সাংবাদিকদের এগিয়ে আসায় নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে যেন প্রাণ সঞ্চার হল আক্রান্তদেরও।

সৈকতশী