মা কালী 

Kali Puja 2024: জঙ্গলের মধ্যে গা ছমছমে পরিবেশ, দাঁইহাটে আজও হয়ে আসছে এই প্রাচীন পুজো

বনোয়ারীলাল চৌধুরী ,পূর্ব বর্ধমান: একসময় ডাকাতরা বর্ধমানের এই কালীপুজো করত। পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট শহরে রয়েছে এই কালী মন্দির। কালীপুজোর আগে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মন্দির চত্বর। তবে দাঁইহাটের এই জায়গায় বর্তমানে মন্দির থাকলেও, আগে এসব কিছুই ছিল না। স্থানীয়দের কথায়, বহু বছর আগে ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল এই জায়গা। এবং সেই ঘন জঙ্গলের মধ্যেই, একদম গা ছমছমে পরিবেশে মা কালীর পুজো করত ডাকাতরা। এবং পুজো শেষে দলবেঁধে তাঁরা রওনা দিতেন ডাকাতির জন্য।

এই প্রসঙ্গে এক স্থানীয় বাসিন্দা তথা দাঁইহাট ইয়াং গ্রুপের সদস্য জানিয়েছেন, “কথিত আছে বেলডাঙা, ফরিদপুরের বাসিন্দারা এই পুজো করতেন। ওঁরা রাত্রে পুজো করে এখান থেকে ডাকাতি করতে বেরিয়ে যেতেন। ১৯৬৬- ৬৭ সালে আমাদের এই জায়গায় ডাকাতের উৎপাত ছিল। আমরা রাত্রে এলাকা পাহারা দিতাম। সেই সময় আমরা দেখেছিলাম এই জায়গা জঙ্গল ছিল এবং এই জায়গায় নারকেল, ধূপকাঠি, বাতাসা সব পড়ে থাকত কিন্তু লোক থাকত না। ধুপকাঠি জ্বললেও কাউকে দেখা যেত না। সেই ডাকাতদের শুরু করা পুজো এখন আমরাই পরিচালনা করছি।”

আরও পড়ুন : দীপাবলিতে বাড়ি-অফিসের এই জায়গায় এভাবে লিখুন ‘শুভ লাভ’, আঁকুন স্বস্তিক চিহ্ন! অভাব দূর হয়ে টাকার বৃষ্টি সংসার-ব্যবসায়ে

পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, এই পুজো আনুমানিক ৪০০ বছরের বেশি পুরনো। তবে স্থানীয়রা উদ্যোগী হয়ে এই পুজো শুরু করেছিলেন ১৯৬৯ সালে। আগে ছোট্ট খড়ের চালার মন্দির থাকলেও এখন হয়েছে পাকা মন্দির। পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটে এখনও জাঁকজমক ভাবে এই কালীপুজো অনুষ্ঠিত হয়। দূর দূরান্ত থেকে বহু ভক্তরা আসেন পুজো দেওয়ার জন্য। এক সময় যে পুজো করত ডাকাতরা, এখন স্থানীয়রাই সেই পুজো পরিচালনা করেন এবং আনন্দে মেতে ওঠেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই কালীপুজোর এক আলাদা খ্যাতি রয়েছে।

দাঁইহাট ইয়াং গ্রুপের সদস্য তথা পুজো কমিটির সম্পাদক মৃণাল কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, “বাবা কাকুরা এই পুজো শুরু করেছিল ১৯৬৯ সাল থেকে। এই জায়গাকে ডাকাতি কালীতলা বা ডাকাতি মায়ের মন্দির বলা হয়। ” গভীর রাতে মা কালীর পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে বেরত ডাকাতরা। আজ আর ডাকাতের উৎপাত নেই! সেসব এখন ইতিহাস। কিন্তু তাদের শুরু করা পুজো এখনও হয় বর্ধমানের দাঁইহাট শহরে।