বহরমপুর দয়ময়ী কালী মন্দির 

Kaushiki Amavasya Puja 2024: বৈদ্যুতিন আলো নয়, প্রাচীন এই কালীমন্দিরে প্রদীপের আলোয় চলে কৌশিকী অমাবস্যার পুজো

কৌশিক অধিকারী, মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরে আছে দয়াময়ী কালী মন্দির। প্রাচীন সৈদাবাদ বলে পরিচিত এই অ‍ঞ্চলে  ১৭৬৬ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণেন্দু হোতার প্রতিষ্ঠিত করেন শিব মন্দির-সহ কালী মন্দির। তবে এই মন্দিরের গর্ভগৃহে কোনও রকম বৈদ্যুতিন আলো বা বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। মোমবাতি ও প্রদীপের আলো জ্বেলেই পুজো চলে সারা বছর। আগামী সোমবার কৌশিকী অমাবস্যা। এই উপলক্ষে ভক্তদের ভিড় হওয়ার আশা। সকাল থেকেই চলবে বিশেষ পুজো পাঠ ও হোম যজ্ঞের আয়োজন করা হবে।

মুর্শিদাবাদ জেলার বৃহত্তম চারচালা মন্দির বলে অনেকে মনে করেন এই কালী মন্দিরকে। প্রায় ৪০ ফুট উঁচু এই মন্দিরে প্রবেশপথের সামনের দিকে পোড়ামাটি ও চুন-বালির দুটি উপাদানের অলংকরণ রয়েছে। পৌরাণিক দেবদেবী, দশাবতার, লঙ্কাযুদ্ধ ও ফুলবাড়ির নকশা আছে। এখান থেকে একটু দক্ষিণে ঘাটবন্দরের আগে রয়েছে প্রাসাদোপম বাড়ি সৈদাবাদ হাউস। ভেতরে যেতে না পারলেও অতীত সৈদাবাদের বড় ইমারত সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়।

জানা গিয়েছে, কৃষ্ণেন্দু হোতা বাংলা বিহার ওড়িশা কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির নায়েব ছিলেন। যদিও তিনি সাধক ছিলেন। আর তিনি এই মন্দির এবং মায়ের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাচীরবেষ্টিত একটি অঙ্গনের মধ্যে কতগুলি মন্দির নিয়ে একটি মন্দিরক্ষেত্র হল দয়াময়ী কালীবাড়ি। কৃষ্ণেন্দ্র হোতা ১১৬৬ বঙ্গাব্দে (১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে) দয়াময়ী কালী মন্দির-সহ অন্যান্য মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। অঙ্গনের উত্তর দিকের মন্দিরে দয়াময়ী কালীমূর্তিটি খুবই সুন্দর। দেবী জাগ্রত বলে সকলে মান্য করেন। দক্ষিণমুখী এই মন্দিরটি একটি জোড়বাংলা মন্দির যার উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট। মন্দিরের থামে, খিলানে ও সামনের দেওয়ালে পোড়ামাটির অলংকরণ রয়েছে। বারবার সংস্কার হওয়ার ফলে এগুলির প্রাচীনত্ব নষ্ট হয়েছে।

আরও পড়ুন : কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে তারা মায়ের পায়ে পুজো দেবেন রাশিয়া থেকে আসা সন্ন্যাসিনী

এই মন্দির চত্বরের মধ্যে পুব মুখে ছয়টি, পশ্চিম মুখে ছয়টি ও উত্তর মুখে একটি-সহ মোট ১৩টি শিব মন্দির রয়েছে। দয়াময়ীর পশ্চিম দিকে এক চূড়াবিশিষ্ট সুদৃশ্য কতগুলি মন্দির আছে। এইসব মন্দিরে আলাদা আলাদা কক্ষে রাম-সীতা, রাধাকৃষ্ণ, অন্নপূর্ণা, অর্ধনারীশ্বর পূজিত হচ্ছেন। দয়াময়ী মন্দিরের সামনে দালান মন্দিরে গ্রহরাজ পূজিত হচ্ছেন। দয়াময়ী মন্দির ও ১৩টি শিব মন্দিরে বর্তমানে সংস্কারের কাজ চলছে। এই মন্দির থেকে কাছে বিষ্ণুপুর বিলের ওপর কৃষ্ণেন্দ্র হোতা একটি পাথরের সেতু নির্মাণ করেন যেটি হোতার সাঁকো পরিচিত। কৌশিকী অমাবস্যার আগেও সেজে উঠছে এই মন্দির ।

প্রসঙ্গত ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তিথি কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিত। শাক্ত মতে যাঁরা দেবীর পুজো করেন, তাঁদের জন্য কৌশিকী অমাবস্যার রাত অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ। তারাপীঠে এদিন মা তারার বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়।