পুজা

Struggle Story: বন্যপ্রাণীদের ভয় উপেক্ষা করে গরম চা আর ঘুগনি বিক্রি জঙ্গলে! আদিবাসী মায়ের জীবন সংগ্রামে চোখে জল আসবে

জলপাইগুড়ি: বর্ষা মুখরিত ঘন জঙ্গল পথ পাড়ি দেওয়া পথিকদের মুখে গরম চা, ঘুগনি তুলে দিয়েই চলছে বেঁচে থাকার লড়াই! কোলে শিশু, ঘরে অসুস্থ স্বামী। সংসারের হাল ধরতে জঙ্গলে পথের ধারে চা -ঘুগনি নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই জারি আদিবাসী মা, পূজার।

নাম পূজা, তবে এখন আর পুজো এলে মনে ফেরে না সেই আনন্দ। কারণ, দশম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার পরেও পরিস্থিতি বাধ্য করেছিল চা বাগানের কাজে যেতে। সেই থেকেই যেন ক্রমশ পুজো, উৎসবের আনন্দ হারিয়ে যেতে থাকে পূজা মীঞ্জ মুন্ডার জীবন থেকে। এরই মধ্যে হঠাৎ জলপাইগুড়ি জেলার আপালচাঁদ বনাঞ্চলের তারঘেরা অঞ্চলের জার্মান মিঞ্জের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। শ্বশুরবাড়িতে নতুন স্বপ্ন নিয়ে পা রাখে পূজা। বিয়ের এক বছরের মধ্যে এক ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়ে ছাত্রী থেকে মাতৃ রূপে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।

তবে সব স্বপ্ন যে সত্যি হয় না, সেটি বুঝতেও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁকে। কোলের ফুটফুটে মেয়েটা হামাগুড়ি দিতে শেখার আগেই পায়ের অসুখে শয্যাশায়ী হন পূজার স্বামী। সেই থেকেই যেন প্রকৃত দশভূজা রূপ ধারণ করে জঙ্গলের মাঝে আরেক সংগ্রামে অবতীর্ণ হন এই মা।

আরও পড়ুন: গৃহস্থবাড়িতে আতঙ্ক! মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল একাধিক বিষধর… কিলবিলিয়ে একের পর এক গোখরো সাপ! শেষমেশ যা হল…

ওদলাবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি-সহ অন্যান্য জায়গায় আসার অন্যতম একটি পথ হল তারঘেরা বনাঞ্চলের মাঝের পথ। সেই পথের ধারেই বন বিভাগের অফিসের সামনে ফুটো টিনের চালার নীচে মাটির তৈরি তিন মুখো কাঠের উনুনে শুকনো ডাল পালার আগুনে সুস্বাদু ঘুগনি আর চা বানিয়ে টানটান উত্তেজনা নিয়ে জঙ্গল পথ অতিক্রম করে আসা পথিকদের অপেক্ষায় বসে থাকেন পূজা। বিকেল হতেই বন্যপ্রাণীদের ভয়ে বন্ধ করে দিতে হয় দোকান। সারাদিন পর কোলের শিশু আর সামান্য উপার্জনকে সঙ্গী করে মুখে একগাল হাসি নিয়ে অসুস্থ স্বামীর পাশে গিয়ে দাঁড়ান পূজা।

সুরজিৎ দে