শীতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ছাদেই পিকনিক! পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ির খেলায় মাতলো শহর

Makar Sankranti 2024: শীতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলল ছাদে ছাদে পিকনিক! পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ির মেলায় মাতলো শহর

পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ির মেলায় মাতলো বর্ধমান শহর। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সকাল থেকে ঘুড়ি লাটাই হাতে বাড়ির ছাদে উঠেছিলেন বাসিন্দারা। দিনভর ছাদেই চলল পিকনিক। সেই সঙ্গে চলল সাউন্ড বক্স বাজিয়ে নাচাগানা। সব মিলিয়ে উৎসবের মুডে পৌষ সংক্রান্তি কাটালো বর্ধমান শহরের বাসিন্দারা। অন্য অনেক জায়গাতেই তো বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানো হয়। বর্ধমানের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম কেন?

বর্ধমানের মহারাজ মহাতাব চাঁদের ছিল ঘুড়ি ওড়ানোর শখ। দেশ-বিদেশ থেকে নানা রঙের, নানা আকারের ঘুড়ি আনাতেন মহাতাব চাঁদ। কারিগরদের নিয়ে এসে ঘুড়ি তৈরি করানো হতো রাজবাড়িতে।

পৌষ সংক্রান্তির সকাল থেকে রাজবাড়ির ছাদে সপারিষদ ঘুড়ি ওড়ানোর আনন্দে মেতে উঠতেন বর্ধমানের মহারাজা মহাতাব চাঁদ। বন্ধু রাজা জমিদারদের আমন্ত্রণ জানানো হতো। সারাদিন ধরে চলত খানাপিনার সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানো। রাজা বা সেই রাজ আমল না থাক রয়েছে রাজবাড়ি। ঘুড়ি ওড়ানোর সেই প্রথা আজও পুরোমাত্রায় বজায় রয়েছে বর্ধমান শহরে।

আরও পড়ুন: তিন টাকাতেই দিলখুশ! এই কচুরির স্বাদেই মজেছে আট থেকে আশি

এদিন সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। তার ওপর তেমন হাওয়া ছিল না। কনকনে ঠান্ডা থাকলেও ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য উত্তুরে হাওয়া খুঁজছিলেন অনেকেই। অনেক বেলায় কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও রোদের তেমন তেজ ছিল না। তবে বেলায় মেঘ কাটার পর হাওয়া দিতেই ঘুড়ি উড়েছে শনশন করে।

বর্ধমান শহরে ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয় মাসখানেক আগে থেকেই। পৌষ সংক্রান্তিতে তা শেষ হয়। এদিন বাড়ির ছাদে ছাদে ঘুড়ি ওড়ানোর হিড়িক দেখা যায়। আকাশে ওড়ে পেটকাটি, চাঁদিয়াল, মোমবাতি, বগ্গা সহ নানা রঙের নানা নামের ঘুড়ি। ছোট বড় নানা রঙের ঘুড়ির মধ্যে চলে কাটাকুটি খেলা। থেকে থেকে মাইকে আওয়াজ ওঠে ভোকাট্টা। রাজ আমল থেকেই এই পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর চল বর্ধমানে।

ঘুড়ি বিক্রেতারা বলছেন, আগে কালীপুজোর পর অর্থাৎ শীতের শুরু থেকেই ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়ে যেত। শেষ হতো এই পৌষ সংক্রান্তিতে। এখন মানুষের ব্যস্ততা বেড়েছে। ছোটদেরও এখন পড়াশোনার অনেক চাপ। তাই আগের তুলনায় এখন ঘুড়ি ওড়ানোর চল অনেকটাই কমেছে।