খেলা, হুগলি Mohun Bagan Day: বুট পরা পায়ের বিরুদ্ধে লড়েছিল খালি পা, ১৯১১ অমর একাদশের ফুসফুস ছিলেন উত্তরপাড়ার মনমোহন মুখোপাধ্যায় Gallery July 29, 2024 Bangla Digital Desk ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবস। এই দিন ১৯১১ সালে ব্রিটিশদের এগেনস্টে ১১ জন দামাল বাঙালি ছেলে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিল ব্রিটিশদেরকে হারানোর। বুট পরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে খালি পায়ে মাঠে খেলতে নামেন ১১ জন তরুণ। লক্ষ্য তাদের তখন একটাই হেস্টিংস এর মাথায় ইংরেজদের পতাকা উড়ছে তাকে নামিয়ে দেশের পতাকা তোলা। সেই ঐতিহাসিক মোহনবাগান একাদশের একজন অন্যতম ছিলেন হুগলির উত্তরপাড়ার মনমোহন মুখোপাধ্যায়। ইংরেজদের বিরুদ্ধে যে গোলটি অভিলাষ ঘোষ করেছিলেন তার পাস বাড়িয়েছিলেন মনোমোহন মুখোপাধ্যায়। সেই সময় গোটা দেশের লোক তাকিয়ে শুধু ওই ১১ জনের দিকে। বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা ইংরেজদের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল তাঁদেরকে দমিয়ে রাখা যাবে না। সেই দিন পা দিয়ে গল গল করে রক্ত বেরোচ্ছিল মনমোহন মুখোপাধ্যায়ের। তবুও গোটা মাঠে ইংরেজদের পা থেকে চুম্বকের মতন বল কেড়ে নিচ্ছিলেন প্রতিবার তিনি। ১৯১১ সেই ঐতিহাসিক জয় আজও প্রতিটি বাঙালির মনে জ্বলজ্বল করছে। স্বর্ণাক্ষরে ভারতের ও ফুটবলের ইতিহাসে লেখা রয়েছে হাবুল, সুকুল, শিবদাস, মনমোহন দে-র নাম। মনমোহন মুখোপাধ্যায় চাকরি করতেন তৎকালীন রাইটার্সের পিডাব্লুডি ডিপার্টমেন্টে। খেলার দিন সকালে তিনি উত্তরপাড়ার গঙ্গার ঘাটের স্নান সেরে রওনা দেন অফিসে। অফিসে তিনি জানান তার সেই দিন একটি জরুরি কাজের জন্য ছুটি লাগবে। যেহেতু ইংরেজদের সময় এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধেই তিনি মাঠে খেলতে নামছেন তাই তিনি অফিসকে জানাতে পারেননি আসল বিষয়। তবে সেখান থেকে বেরিয়ে কলকাতা মাঠে তিনি পৌঁছান পায়ে হেঁটেই। অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ি মনমোহনকে ডাকতেন মনু বলে। ডানদিকের মাঝমাঠ থেকে খেলা পরিচালনা করার দায়িত্ব ছিল মনমোহন মুখার্জি উপর। মনমোহন মুখার্জি বংশধর তার নাতি নিখিল মুখোপাধ্যায় বলেন, তিনি লোক মুখে শুনেছেন মানুষজন মনে করত মনমোহন বাবুর হয়তো দুটি ফুসফুস রয়েছে। তিনি একাই নিজেদের ডিফেন্স থেকে শুরু করে প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট অবধি ছুটে বেড়াতেন। আর চুম্বুকের মতন বিরোধীদের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তার প্রধান কাজ। প্রধম অর্ধে ১-০ গলে পিছিয়ে থাকা মোহনবাগান দ্বিতীয়ার্ধে খেললো একেবারে দৈত্যের মতোন। ইস্ট ইয়র্কের রক্ষন ভাগ একা কানু রায়ের আক্রমনকেই প্রতিহত করতে পারছিলো না , কানু রায় ও হাবুল সরকারের মধ্যে দারুন বোঝাবুঝি ছিলো , তাতে বিপক্ষের রক্ষন পজুর্দস্ত হয়ে পড়েছিলো , খেলা শেষ হবার দশ মিনিট আগে শিবদাস আচমকা ডান দিকে ছুঁটে গিয়ে লেফট ব্যাককে ডজ করে দুর্দান্ত একটা শট নিলেন , ইস্টইয়র্কের গোলকিপার ক্রেসি সম্পূর্ণ পরাস্ত হলেন। প্রথম গোলের ঘুড়ি আকাশে উড়ল মোহনবাগানের নামে।এই সাফল্যে বাঙ্গালী সমর্থকরা এমনই চিত্কার করেছিলেন তাঁদের গলা ভেঙ্গে গিয়েছিল বন্দে মাতরম এর স্লোগানে। খেলা শেষ হওয়ার মাত্র দু মিনিট আগে , মনমোহন মুখোপাধ্যায় একটি চমৎকার পাস দিলেন অভিলাষ ঘোষকে , অভিলাষ দু -জন ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক কে কাটিয়ে এগিয়ে গেলেন এবং হাঁটতে -হাঁটতে গোলে বল ঠেলে দিলেন। খেলার অন্তিম ফলাফল হয় ২-১। প্রথমবার ইংরেজদের পরাজয় আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে পড়ে সমস্ত দর্শকরা।