গঙ্গায় ঝাঁপ।

Nabanna Abhijan: নবান্ন অভিযানের আগেই নাম ‘জড়িয়ে গেল’ বিজেপির! থানায় আনা হল ২ গেরুয়া নেতাকে! নেপথ্যে ভয়ঙ্কর ‘ভিডিও’

কলকাতা: মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্টের নবান্ন অভিযানের আগে স্টিং অপারেশনে তোলা ভিডিও প্রকাশ করে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দুই মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে দুটি ভিডিও প্রকাশ করে তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন, বুধবারের কর্মসূচিকে রক্তাক্ত করতে এবং হিংসা ছড়িয়ে দিতে বড় ধরনের চক্রান্ত চলছে৷ এ দিন নবান্ন অভিযান নিয়ে দুটি ভিডিও প্রকাশ করে তৃণমূল৷ সেই ভিডিওতে নবান্ন অভিযান সম্পর্কে বলতে গিয়ে দু’জনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘একটা দুটো বডি যদি না পড়ে কিচ্ছু হবে না৷ গুলি চলবে, রবার বুলেট চলবে৷’ ‘২৭ তারিখ ওখানে বডি পড়বেই’, এমন মন্তব্যও শোনা গিয়েছে ভিডিওতে৷ যদিও এই ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করেনি নিউজ ১৮ বাংলা৷ আর তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ ওঠার পরই নবান্ন অভিযানে অশান্তি ছড়ানোর পরিকল্পনা ছড়ানোর অভিযোগে দুই বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে আসা হল ঘাটাল থানায়।

বাবলু গঙ্গোপাধ্যায় খাড়ার পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। সৌমেন চট্টোপাধ্যায় বিজেপি নেতা। এই দুজনকেই নিয়ে আসা হয়েছে ঘাটাল থানায়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে, ঘাটাল থানায় এসেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: সন্দীপ ঘোষের ‘ডানহাত’ কে? শেষমেশ ‘জেনেই’ ফেলল সিবিআই! খোঁজ মিলল ‘সিং’য়েরও, ভয়ঙ্কর অভিযোগ

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেন, পুলিশের পোশাক পরে মিছিলে আসা মানুষের উপর গুলি চালানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও অভিযোগ করেন, আগামিকালের কর্মসূচির কোনও অনুমতি এখনও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি৷

এই ভিডিওগুলি দেখিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আগামিকালের নবান্ন অভিযান বেআইনি এবং অবৈধ৷ কোনও দায়িত্বশীল সংগঠন প্রশাসন, পুলিশকে জানিয়ে এই কর্মসূচি করছে না৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় হাওয়া তুলে লোক খেপানোর চেষ্টা চলছে৷ যারা বাংলায় নির্বাচনে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, তারা হিংসার রাজনীতি করতে চাইছে৷ এই ভিডিও আমরা নিজেদের সূত্র কাজে লাগিয়ে পেয়েছি৷ আইনি ভাবে যেখানে যেখানে দেওয়ার দিচ্ছি৷ আমরা মানুষকে দেখাতে চাইছি, আরএসএস, বিজেপি, এবিভিপি লোক উস্কানি দিচ্ছে৷ সিপিএম মনোভাবাপন্ন কিছু লোক আছে৷ বাংলা বিরোধীরা এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে৷ নাশকতার জন্য বাংলার বাইরে থেকে লোক ঢোকানো হতে পারে৷ পুলিশের পোশাক পরে গুলি চালানো হতে পারে যাতে অশান্তি, গন্ডগোল হয়৷’

তৃণমূল নেতা আরও বলেন, ‘আগামিকাল পরীক্ষা রয়েছে, যারা নিজেদের ছাত্র বলে দাবি করছেন তারা পরীক্ষার দিনে এই অরাজকতা করতে পারে? শকুনের রাজনীতি চলছে৷ তদন্ত করছে সিবিআই, মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে আর এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযান চলছে!’

তৃণমূলের তরফে এদিন আরও অভিযোগ করা হয়, ২৭ অগাস্ট অরাজনৈতিক নাম করে নবান্ন অভিযান ডাক দিয়েছেন যে তিনজন ব্যক্তি, নিজেদেরকে অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়েছে তাদের মধ্যে একজনের রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত ইতিহাস জানা প্রয়োজন। শুভঙ্কর হালদার ২০০৮ সাল থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে জড়িত ২০১১ সালের গঠিত কলেজ কমিটিতে একজন কার্যকারী সদস্য ছিল এবং দীর্ঘ দুই বছর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কলেজ কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য পরবর্তীতে ২০১৪ সালে একটি ধর্ষণ এবং কিডন্যাপিং এর মামলায় জড়িয়ে যাওয়ায় তাকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করায় মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। তারও পরবর্তী সময় এবিভিপি-র নবদ্বীপ শাখার সভাপতি পদে নিযুক্ত হয়। এরপর কলেজের বিভিন্ন মারামারি অশান্তিতে আরও বিভিন্ন কেসে ফেঁসে যায়। কলেজে কলেজে ভাঙচুর ভারপ্রাপ্ত আইসি-র গায়ে হাত তোলা এরকম বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে। এই অরাজনৈতিক নাম করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিজেপির আশ্রয়ে আশ্রিত একজন সমাজ বিরোধী ধর্ষণকারী ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিজেকে মুখ হিসেবে তুলে ধরে নিজের ইমেজ ঠিক করতে।

—- সুকান্ত চক্রবর্তী