ঘরের এক কোনায় মশারি টাঙিয়ে শুয়ে রয়েছেন বৃদ্ধা

Nadia News: ‘ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার…’ এলাকাবাসীদের উদ্যোগ, ঘর পেলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা

নদিয়া: জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন নয়, ক্ষমতাবান কেউ নন, এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। চরম অমানবিক পরিস্থিতি থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধার নিয়মিত যত্ন নিতে পৈতৃক ভাগ নেওয়া তিন ছেলেকে বাধ্য করলেন এলাকার মানুষ।

নদিয়ার শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েতের চাঁদকুড়ি গ্রামে বসুদেব পাল মারা যান প্রায় ১৫ বছর আগে। তাঁর স্ত্রী রেবা পালের বয়স আনুমানিক ৯০ বছর। পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা হলেও মায়ের যত্ন এবং দেখভালের দায়িত্ব কেউই নেননি। অথচ বৃদ্ধার ছেলেরা সকলেই প্রায় আর্থিক দিক দিয়ে স্বচ্ছল। দিনের পর দিন বৃদ্ধার এই করুণ পরিস্থিতি দেখতে না পেরে সহ্যের বাধ ভেঙে এলাকাবাসীরা নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিলেন। মায়ের নামে নির্ধারিত ঘর থেকে কার্যত এক ছেলের শাশুড়িকে বের করে দিয়ে বৃদ্ধাকে তুলে দিলেন সেই ঘরে।

আরও পড়ুন: ঝেঁপে আসছে বৃষ্টি…? বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-জলের সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায়! ঘণ্টা দুয়েকেই আবহাওয়ার বদল

প্রায় ৯০ বছরের বৃদ্ধা দীর্ঘ ৬ মাস ধরে পড়ে ছিলেন আস্তাকুড়ের ঘরে। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীদের। বাবা মারা যাওয়ার পর পৈত্রিক প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছে তিন ছেলে। বড় ছেলে অনুপ পাল পেশায় শিক্ষক। আছে দোতলা বাড়ি এবং সঙ্গে ঘরে রয়েছে এসি মেশিনও। মেজো ছেলে সঞ্জয় পাল পাওয়ার লুমের মালিক এবং সুদের কারবারি। অন্যদিকে ছোট ছেলে শান্ত পাল টোটো চালায় সঙ্গে সুদের সুদের কারবার। এমনকি করিৎকর্মা পুত্র মায়ের নামে সরকারি গৃহ আবাস যোজনার ঘরেও রমরমিয়ে চালাচ্ছিলেন কাপড়ের ব্যবসা।

এদিকে ছেলেদের স্বচ্ছল অবস্থা সত্ত্বেও মা কষ্ট পাচ্ছেন তীব্র এই গরমে। এই পরিস্থিতিতে শেষমেশ এলাকার মানুষজন রাজনীতি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে এদিন তিন ছেলেকে মায়ের যত্ন এবং দায়িত্ব নিতে কার্যত বাধ্য করলেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও এদিন মেনে নিলেন এলাকার প্রায় ৩৫০ মানুষের দাবি।

মৈনাক দেবনাথ